—ফাইল চিত্র।
গত দেড় মাস কাশ্মীর নিয়ে ধারাবাহিক কূটনৈতিক লড়াইয়ের পরে এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের ঠিক আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘বিশেষ সৌজন্যে’ উল্লসিত সাউথ ব্লক। ২২ সেপ্টেম্বর হিউস্টনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনদের একটি সভায় উপস্থিত থাকার জন্য ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছিল নয়াদিল্লি। আজ সকালে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ওই অনুষ্ঠানে থাকছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দুই নেতার একটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও হয়ে যাবে সেখানে।
এর পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হিউস্টনে আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিশেষ সৌজন্য। ভারত-মার্কিন সম্পর্কের শক্তি এবং মার্কিন সমাজ ও অর্থনীতিতে ভারতীয় সমাজের অবদানই এই সিদ্ধান্তে ফুটে উঠছে।’’ ভারতের আমন্ত্রণে ট্রাম্পের সাড়া দেওয়ার ঘটনায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তাঁর কথায়, ‘‘দু’দেশের নেতার ব্যক্তিগত রসায়ন এবং বন্ধুত্বই প্রতিফলিত হচ্ছে এই ঘটনায়। দুই নেতা একইসঙ্গে হাউডি মোদী অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত থাকবেন। এটা একটা ঐতিহাসিক এবং অভূতপূর্ব ঘটনা।’’ জানা গিয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত তুলসী গাবার্ড-সহ ৬০ জন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য উপস্থিত থাকবেন ওই বৈঠকে। সংগঠকেরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য নাম লিখিয়েছেন। হিউস্টন টেক্সাস ফুটবল টিমের এনআরজি স্টেডিয়ামে স্থানীয় সময় দুপুর বারোটায় ওই অনুষ্ঠান শুরু হবে।
হোয়াইট হাউস যে গোটা বিষয়টিতে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে, তা ট্রাম্পের আচরণে স্পষ্ট। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে পাকাপোক্ত সম্পর্ককে তুলে ধরার একটি বড় সুযোগ এই সমাবেশ। দু’দেশের মধ্যে শক্তি ও বাণিজ্যক্ষেত্রে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা নিয়েও আলোচনা করবে দুই পক্ষ।’’ এটা ঘটনা যে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতি এবং কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের মতো বিষয়গুলি বাদ দিয়েও হোয়াইট হাউসের উল্লেখ করা দু’টি বিষয় সাউথ ব্লকের বড় উদ্বেগের কারণ। মার্কিন নিষেধে ইরান থেকে তেল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া যে ভারতের শক্তি নিরাপত্তায় বড় সঙ্কটের কারণ, সে কথা ফের বলার সুযোগ পাবেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ, মোবাইল, দুগ্ধজাত মার্কিন পণ্যে ভারত যথেষ্ট বাজার খুলে দিচ্ছে না বলে ক্ষোভ ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের। ভারতে ই-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা আরও কমানো এবং বিদেশি সংস্থার ভারতে বাণিজ্য করার সময়ে গৃহীত তথ্যকে ভারতের বাইরে যেতে না দেওয়ার নীতিতেও সমস্যা রয়েছে আমেরিকার। এই দু’ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করতে অনুরোধ করবে ট্রাম্প প্রশাসন।
দু’দেশের একগুচ্ছ বাণিজ্য সংক্রান্ত পদক্ষেপও ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে, ইঙ্গিত দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রক। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, ‘‘আমরা একটি চুক্তি চূড়ান্ত করছি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী কবে সেই চুক্তির কথা ঘোষণা করবেন, তা তাঁদের উপরে নির্ভর করছে।’’