ছবি: রয়টার্স।
নিশানায় আফগানিস্তান। শান্তির কথা বলতে গিয়ে যুদ্ধের হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ওভাল অফিসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে বসিয়ে বললেন, ‘‘চাইলে সাত দিনে আমরা মানচিত্র থেকে আফগানিস্তানকে মুছে ফেলতে পারতাম। কিন্তু আমরা আলোচনার পক্ষপাতী। এক কোটি মানুষ মারতে চাই না।’’
আফগানিস্তানের সরকার দেশে শান্তি ফেরানোর নামে জঙ্গি গোষ্ঠী তালিবানের সঙ্গে আমেরিকার আলোচনা প্রস্তাবে বরাবর দূরত্ব বজায় রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে চাপ বাড়িয়ে তাদের আলোচনার টেবিলে আনতেই ট্রাম্পের এই হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে। কাবুল অসন্তুষ্ট এতে। ট্রাম্পের গত কালের এই মন্তব্যের ‘উপযুক্ত ব্যাখ্যা’ চেয়ে আজ কড়া বার্তা দিয়েছে তারা। এ দিন আফগান প্রেসিডেন্টের অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘শান্তি আলোচনায় আপত্তি নেই। কিন্তু বিদেশি শক্তিকে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে দেব না।’’
আগামী সেপ্টেম্বরে ভোট রয়েছে আফগানিস্তানে। আমেরিকা চায়, তার আগেই তালিবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সেরে ফেলতে। এ জন্য আফগানিস্তানের সরকারও যাতে তালিবানের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে, পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে ওয়াশিংটন। আবার আফগানিস্তানকে নিশানায় রেখে, ট্রাম্প পাকিস্তানের উপরেও চাপ বজায় রাখতে চাইছেন বলেও মনে করা হচ্ছে। একটা সময়ে পাকিস্তানের মদতেই আফগানিস্তানে ক্ষমতায় এসেছিল তালিবান। ওসামা বিন লাদেনের হদিস মিলেছিল সে দেশেই।
কাশ্মীরে মধ্যস্থতা সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্যের পরে আফগানিস্তান নিয়ে ট্রাম্পের এমন হুঁশিয়ারি ভাল ভাবে নিচ্ছে না আন্তর্জাতিক মহলের একটা বড় অংশ। আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত জ়ালমে খালিজ়াদ অবশ্য বলেই চলেছেন, ‘‘মুখে যুদ্ধের কথা বললেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসলে শান্তি আলোচনার উপরেই জোর দিতে চাইছেন।’’
হোয়াইট হাউসে আসার আগে থেকেই এই শান্তি আলোচনার কথা বলে আসছেন ট্রাম্প। ২০১৭-য় সেই অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে জানান, তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবেই। তার পর ফের ভোলবদল গত ডিসেম্বরে। এ বারে ট্রাম্প জানান, কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি আফগানিস্তান থেকে অর্ধেক সেনা সরিয়ে নেবেন। মার্কিন সেনেটরদের অনেকের হুঁশিয়ারি, সেনা সরানো মানে আরও একটা ৯/১১-এর রাস্তা করে দেওয়া। এ সব মাথায় রেখেই ট্রাম্প গত কাল এই হুঁশিয়ারি দিলেন কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করার জন্য ইমরানকে চিঠি লিখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইমরান জবাবে জানান, ‘‘যত দূর সম্ভব করব।’’ সে
বার ইমরান দায়সারা মন্তব্য করলেও এ দিন তাঁকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসাই করেন ট্রাম্প। বলেন, ‘‘আফগানিস্তানে শান্তি সমঝোতার বিষয়টা অনেক দূর এগিয়েছে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।