ডোনাল্ড ট্রাম্প—ফাইল চিত্র
গত এপ্রিলে ও চলতি মাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে আপত্তি তুলল আমেরিকা ও ব্রিটেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ফোন করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন, মস্কো বা বেজিংয়ের সঙ্গে অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর ব্যয়বহুল প্রতিযোগিতা চায় না ওয়াশিংটন। দু’জনের আলোচনায় ইরানের প্রসঙ্গও উঠেছিল বলে সূত্রের খবর।
অস্ত্রের দৌড় বন্ধ করে উভয় দেশের পরমাণু অস্ত্রের সম্ভার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০১০-এ চুক্তি করেছিল আমেরিকা ও রাশিয়া। প্রাগে স্বাক্ষরিত ওই ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি কার্যকর হয় ২০১১ সালে। ২০২১-এর ৫ ফেব্রুয়ারি তার মেয়াদ ফুরোবে। এটির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর অর্থাৎ ২০২৬ পর্যন্ত বাড়ানোর রাস্তা খোলা রয়েছে। সেই পথে হাঁটবে, নাকি নতুন করে কোনও চুক্তি করা হবে, তা নিয়ে আমেরিকা ও রাশিয়া আগামী সপ্তাহে আলোচনায় বসবে ভিয়েনায়। তার ঠিক আগে পুতিনকে ট্রাম্পের এই ফোন বিশেষ অর্থবহ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এগিয়ে আসছে। কোভিড-১৯ অতিমারিতে দেশ বিপর্যস্ত। করোনার জেরে বেহাল অর্থনীতিও। সে কারণে ব্যয়বহুল অস্ত্র-দৌড় থেকে দূরে থাকতে চাওয়াটা ট্রাম্পের পক্ষে স্বাভাবিক। কিন্তু এই ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিশ্বাসের যে বাতাবরণটা জরুরি, তাতেই যথেষ্ট খামতি ফুটে উঠছে ইতিমধ্যেই।
যেমন, ট্রাম্প চেয়েছিলেন চিনও ভিয়েনা বৈঠকে শামিল হোক। কিন্ত বেজিং আদৌ রাজি নয় তাতে। তাদের বক্তব্য, চিনের অস্ত্রসম্ভারের বহর রাশিয়া ও আমেরিকার চেয়ে ঢের কম। ফলে অস্ত্রসম্ভার সঙ্কোচনের আলোচনায় তাদের যোগ দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। আমেরিকা যদি তাদের পরমাণু অস্ত্রের পরিমাণ চিনের কাছাকাছি নামিয়ে আনে, তবেই একমাত্র বেজিং ওই আলোচনায় যোগ দিতে পারে। সেটার কোনও সম্ভাবনা যে নেই চিন ও আমেরিকা, উভয়ের কাছেই তা স্পষ্ট। বর্তমানে আমেরিকার পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার চিনের চেয়ে ২০ গুণ বেশি।
আমেরিকার মূল টক্কর রাশিয়ার সঙ্গে। আমেরিকা ও তাদের মিত্র দেশ ব্রিটেনের অভিযোগ, গত ১৫ জুলাই মস্কো কৃত্রিম উপগ্রহ ধংস করতে সক্ষম, এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে মহাকাশে। পরীক্ষামূলক এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণে অবশ্য কোনও উপগ্রহকে ধ্বংস করা হয়নি। তবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক মার্কিন আলোচনাকারী মার্শাল বিলিংস্লি-র বক্তব্য, “রাশিয়ার এই পদক্ষেপ কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। খুবই গুরুতর এই বিষয়টি ভিয়েনা বৈঠকে তুলবে আমেরিকা।”