ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
ডান কানের উপরের অংশ ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে বুলেট। পেনসিলভেনিয়াকাণ্ডের পর সমাজমাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সংস্থা ট্রাম্প কমিউনিকেশনের ডিরেক্টর বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সুস্থ রয়েছেন। স্থানীয় এক চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা চলছে।
শনিবার পেনসিলভেনিয়ার বাটলারে প্রচারসভা ছিল ট্রাম্পের। উপস্থিত ছিলেন হাজারখানেক রিপাবলিকান সমর্থক। ট্রাম্প ভাষণ শুরু করার সাত মিনিটের মাথায় ছুটে আসে গুলি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর কান ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় সেটি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি। সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টদের পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছেন আততায়ী টমাস ম্যাথিউ ক্রুক। এই নিয়ে তাঁর সংস্থার সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ‘‘শোঁ করে গুলির শব্দ, শুনে বুঝতে পারি কিছু একটা হয়েছে। তার পরেই অনুভব করি চামড়া ছিঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে সেটি।’’
ট্রাম্পের ওই সভার সম্প্রচার হচ্ছিল একটি চ্যানেলে। সেখানে দেখা গিয়েছে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের ভাষণের মাঝেই গুলির শব্দ হয়। আর তার পর ৭৮ বছরের ট্রাম্পকে ঘিরে ধরেন সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যেরা। সে সময় মঞ্চে তাঁকে বেশ কিছু নির্দেশ দিতে শোনা গিয়েছে। মঞ্চে বসানো মাইকে ধরা পড়েছে তাঁর কণ্ঠ। এর পরেই ট্রাম্পকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি দর্শকদের উদ্দেশে মুঠি ছুড়ে দেন। মিলওয়উকিতে রিপাবলিকানদের ন্যাশনাল কনভেনশন রয়েছে। সেখানে সরকারি ভাবে দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে চলেছেন ট্রাম্প। তার দু’দিন আগে পেনসিলভেনিয়াতে এই হামলার ঘটনা।
এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে আরও লিখেছেন, ‘‘পেনসিলভেনিয়ার বাটলারে গুলিচালনার যে ভাবে মোকাবিলা করেছে আমেরিকার সিক্রেট সার্ভিস এবং পুলিশ বিভাগ, তাদের আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। সভায় যিনি নিহত হয়েছেন, তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাই। যিনি গুরুতর আহত হয়েছেন, তাঁর পরিবারকেও সমবেদনা জানাই।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘এটা ভেবে বিস্ময়কর লাগছে যে, এই ধরনের ঘটনা আমাদের দেশে ঘটতে পারে। আততায়ী মারা গিয়েছেন। তাঁর বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। আমার দিকে গুলি ছোড়া হয়, যা আমার কানের উপরের অংশ ভেদ করে চলে গিয়েছে। অনেক রক্তক্ষরণ হতে থাকে। তখনই বুঝতে পারি, কী হয়েছে। আমেরিকাকে রক্ষা করুন ঈশ্বর।’’
ট্রাম্প যখন এই পোস্ট দিয়েছেন, তখন আততায়ীর পরিচয় জানা যায়নি। পরে এফবিআই জানিয়েছে, বন্দুকবাজের নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুক। তাঁর বয়স ২০ বছর। পুলিশ এবং রক্ষীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। তাঁর ছোড়া গুলিতে আরও এক সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। দু’জন গুরুতর আহত। এফবিআই এ-ও জানিয়েছে, পেনসিলভেনিয়ার বেথেল পার্কের বাসিন্দা ক্রুক। ট্রাম্পের যেখানে মঞ্চ ছিল, তার থেকে ১৩০ গজ (১১৯ মিটার) দূরে একটি উঁচু ছাদ থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি ছুড়েছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই সতর্ক হয়ে যান সিক্রেট সার্ভিস কাউন্টার-স্নাইপার দলের সদস্যেরা। তাঁরা ক্রুককে লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছোড়েন। তাতেই মৃত্যু হয় যুবকের।