ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়াকে নিয়ে বিরোধীদের একহাত নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংবাদসংস্থা
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট আনার সিদ্ধান্তকে ডেমোক্র্যাটদের‘অভ্যুত্থানের চেষ্টা’ বলে বর্ণনা করলেন। মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুইটারে লিখেছেন, ‘আমি প্রতিদিন শিখছি। এখন সিদ্ধান্তে এসেছি যে আমাকে ইমপিচ করার সিদ্ধান্ত আসলে একটি ‘ক্যু’। মার্কিন নাগরিকদের ভোটাধিকার,স্বাধীনতা, ভোটাধিকার ঈশ্বরপ্রদত্ত সমস্ত অধিকার কেড়ে নিতেই এই চক্রান্ত চলছে।’
কী কারণে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট? অভিযোগ,ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত ফের শুরু করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই গত বুধবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস উত্তাল হয়। ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করে দেন। স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ডেমোক্র্যাট সদস্যদের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে ইমপিচমেন্টের তদন্ত শুরু করার কথা ঘোষণা করেন। সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ট্রাম্পের ভবিষ্যত নিয়ে। তদন্তের পরে কি তাঁকে সাংবিধানিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, জল্পনা চলছে তাই নিয়েও।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য‘সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা’ লঙ্ঘনের এই অভিযোগকে নস্যাৎই করে দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিষ্কার দাবি, তিনি অন্যায় করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে। মঙ্গলবার ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটিক হাউস কমিটির তিন সদস্যকে দায়ী করেন ইমপিচমেন্ট তদন্তের সিদ্ধান্তের জন্যে। তাঁর মতে,এই চেষ্টাবিদেশ দফতরের বাছাই করা কিছু পেশাদার মানুষকে অসম্মান করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ঘুষ নেওয়া অথবা অন্য কোনও অপরাধের অভিযোগ এলে রাষ্ট্রপ্রধানেরও বিচার হতে পারে। তাঁকে পদচ্যুত করতে হলে দুই তৃতীয়াশ সেনেটরকে ইমপিচমেন্টের পক্ষে ভোট দিতে হবে। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনকে ইমপিচ করার তৎপরতা শুরু হয়েছিল মার্কিন সেনেটে। যদিও শেষ পর্যন্ত তা করা যায়নি। ট্রাম্পের সমর্থকরা মনে করেন, ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হলেও তিনি ফের ভোটে জিতে মসনদের দখল নেবেন।
আরও পড়ুন:আমেরিকার ‘রানু মণ্ডল’-এর গান শুনেছেন?
আরও পড়ুন: ডেরায় ঢুকে সিংহের সামনেই নাচ মহিলার! ভিডিয়ো দেখে মাথায় হাত নেটিজেনদের
বিরোধীদের দাবি, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপরে তিনি চাপ তৈরি করেছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত পুনরায় শুরুর জন্য। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বাইডেনও। জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর ফোনালাপের রেকর্ড গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয় হোয়াইট হাউসে। তারপরেই দাবি ওঠে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার। বিরোধীদের স্পষ্ট অভিযোগ, তিনি শপথ লঙ্ঘন করেছেন, এই কারণেই ইমপিচমেন্ট জরুরি। তাঁরা এও বলেন ট্রাম্প হুইসলব্লোয়ারের মুখোমুখি হতে রাজি নন।
ইমপিচমেন্টের তদন্তের সম্ভাবনা প্রবল হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করেন ট্রাম্প। রবিবার সন্ধের পর তিনি টুইট করেন, ‘ আমি চিনতে তাই হুইসলব্লোয়ারকে। প্রত্যেক মার্কিন নাগরিকের মতো আমারও অধিকার রয়েছে ওই অভিযোগকারীর মুখোমুখি হওয়ার। ট্রাম্পের আরও দাবি, ‘আমায় ইমপিচ করা হলে বাজার ধসে পড়বে। গোটা দেশ গরিব হয়ে যাবে।