এফবিআই কোহেনের ঘরে! চটে লাল ট্রাম্প

ফুঁসে উঠে তিনি বললেন, ‘‘এ যেন ‘উইচ হান্ট’ চলছে। কোহেনের দফতর ভেঙে ঢুকে পড়েছে এফবিআই!’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০২
Share:

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন মার্কিন সেনার শীর্ষ-কর্তাদের সঙ্গে বসে রয়েছেন। সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হানা নিয়ে আলোচনা চলছিল। খবর এল, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল ডি কোহেনের দফতরে হানা দিয়েছে এফবিআই। শুনেই পলকে বদলে গেল ট্রাম্পের মেজাজ। ফুঁসে উঠে তিনি বললেন, ‘‘এ যেন ‘উইচ হান্ট’ চলছে। কোহেনের দফতর ভেঙে ঢুকে পড়েছে এফবিআই!’’

Advertisement

কোহেন দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্পের আইনজীবী। পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে ট্রাম্পের ‘সম্পর্ক’ ঘিরে বেশ কিছু দিন ধরে শিরোনামে আসছে এই আইনজীবীর নাম। সোমবার সকালে কোহেনের রকফেলার সেন্টারের দফতর এবং পার্ক অ্যাভিনিউ হোটেলের ঘরে পৌঁছে যায় এফবিআই-এর লোকজন। তাঁর ব্যবসা সংক্রান্ত রেকর্ড, ইমেল এবং আরও নানা বিষয়ের কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে তারা। যার মধ্যে রয়েছে স্টর্মির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কাগজপত্রও।

‘ব্যাঙ্ক জালিয়াতির’ তদন্তের জন্য এফবিআই কোহেনের দফতরে হানা দিয়েছে বলে জানানো হয় ট্রাম্পকে। যা শুনে তিনি বলেন, ‘‘অসম্মানজনক ব্যাপার।’’ ট্রাম্পের কথায়, ‘‘দেশের উপরে আক্রমণ ছাড়া এটা কিছু নয়।’’ কোহেনের আইনজীবী স্টিফেন রায়ানের দাবি, মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তের বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের চাপে তড়িঘড়ি এই তল্লাশি। এটা একেবারেই ঠিক নয় এবং এর কোনও প্রয়োজনও ছিল না বলে মন্তব্য করেছে রায়ান। হোয়াইট হাউসের অন্দরে অনেকেই মনে করছেন, মুলারের তদন্তের সঙ্গে এফবিআই হানার সরাসরি সম্পর্ক নেই। কিন্তু মুলার তদন্ত করতে গিয়ে যে তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন, তার জেরে হয়তো এই হানা।

Advertisement

এফবিআই-প্রধানের পদ থেকে জেমস কোমিকে আগেই সরিয়েছেন ট্রাম্প। রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তের জেরে এ বার কি মুলারের পালা? প্রশ্নটা ঘুরছে অনেক দিন। বস্তুত গত বছরের জুন থেকে। গত সোমবারই ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘আমরা দেখি কী হয়। অনেকে আমাকে বলেছেন, ওঁকে (মুলার) সরানো উচিত।’’ শুধু কোমি-মুলার প্রসঙ্গ নয়, আরও কিছু কারণে এফবিআইয়ের উপরে খাপ্পা ট্রাম্প। রুশ তদন্তে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কোপের মুখে পড়েন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস। একই দশা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টাইনের। ট্রাম্প বলেন, ‘‘মুলারের গোটা দলই পক্ষপাতদুষ্ট।’’ তাঁর মতে, সে দলে ডেমোক্র্যাটদের ভিড়। আর রয়েছেন এমন কিছু রিপাবলিকান যাঁরা আবার ওবামার হয়ে কাজ করেছিলেন।

এফবিআইয়ের সঙ্গে সংঘাত বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রাম্প নিজেও যথেষ্ট আতান্তরে। তদন্তের মুখে তাঁর আইনজীবী। প্রশাসনে জামাই জ্যারেড কুশনারের এক্তিয়ার নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে। ট্রাম্প শিবিরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পল ম্যানাফর্ট আর্থিক নয়ছয়ে অভিযুক্ত। প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিথ্যে বলে দোষী সাব্যস্ত। কোহেন-কাহিনি কোথায় গড়ায়, এ বার নজর সে দিকেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement