Russia

Russia: খবরদার! ভুলেও যেন রুশ পুতুল খুঁজবেন না ছবির মতো সুন্দর শহর কিভের দোকানে

রাজনীতি নিয়ে যাঁরা বিশেষ মাথা ঘামান না, সেই সব সাধারণ ইউক্রেনবাসীও রাশিয়াকে অতিসক্রিয় অবাঞ্ছিত প্রতিবেশী হিসেবেই গণ্য করে।

Advertisement

চিরদীপ দে

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:৫০
Share:

কিভের সুভেনির শপে কেনা, তাই এগুলি ‘রুশ পুতুল’ নয়! নিজস্ব চিত্র

রোজ সকালে খবরের কাগজ খুললেই দেখছি ইউক্রেন নিয়ে হইচই। টিভি চালালেও একই ছবি। সেই সব খবর দেখতে দেখতে মনটা কয়েক মাস আগে ফিরে যাচ্ছিল।

Advertisement

গত বছর জুলাই মাসের কথা। ভারত থেকে আমার কর্মস্থল হংকংয়ে ফিরতে গিয়ে কোভিড বিধির গেরোয় তিন সপ্তাহ কাটাতে হয়েছিল ইউক্রেনের রাজধানী কিভে। ছবির মতো সুন্দর এই কিভ। দারুণ সাজানো-গোছানো, যে-কোনো ইউরোপীয় শহরকে টেক্কা দিতে পারে। এই শহরটা যে ১৬০০ বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত, সেটা যেন কিভের প্রত্যেক অলিগলি বারবার মনে করিয়ে দেয়। রাস্তাঘাট ঝকঝকে পরিষ্কার, চারপাশে সবুজের সমারোহ। আর তার মধ্যে অসাধারণ স্থাপত্যের সব গির্জা ও প্রাসাদ। গথিক, বারোক, বাইজ়েন্টাইন— বিভিন্ন স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন সেগুলি। কিন্তু তারই মধ্যে বেশ কিছু নিষ্প্রাণ স্থাপত্য সাবেক সোভিয়েত দেশের কথা মনে করিয়ে দেয়। ইউক্রেন যে এক কালে তারই অংশ ছিল।

এই সব প্রাসাদোপম স্থাপত্যগুলো ইউক্রেনের সোভিয়েত-অতীতের কথা মনে করিয়ে দিলেও কিভের সাধারণ মানুষ কিন্তু সে সব কথা শুনতে আদপেই পছন্দ করেন না। কাফে বা রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে সুভেনিরের দোকান— যেখানেই রাশিয়ার কথা তুলেছি, খেয়াল করে দেখেছি, নয় মানুষজন সেই সব কথাবার্তা একেবারে এড়িয়ে যান, না হলে খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েন। যেমন ধরুন মাত্রিয়োশ্কা ডল। বড় পুতুলের মধ্যে মেজো পুতুল, তার মধ্যে সেজো পুতুল, আবার সেজোর মধ্যে আরও খুদে ছোট্ট পুতুল। এই ধরনের পুতুল-সেটকে আমরা সাধারাণত রুশ পুতুল বলেই জানি। কিন্তু ইউক্রেনের কোনও দোকানে গিয়ে আপনি যদি ‘রুশ পুতুল’ দেখতে চান, তা হলে
আপনার কথা না-শোনার ভাণ করবেন মনক্ষুণ্ণ দোকানি।

Advertisement

ক্রাইমিয়া-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন ‘বিচ্ছিন্ন’ প্রদেশ নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার দ্বন্দ্ব সাধারণ মানুষের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। রাজনীতি নিয়ে যাঁরা বিশেষ মাথা ঘামান না, সেই সব সাধারণ ইউক্রেনবাসীও রাশিয়াকে অতিসক্রিয় অবাঞ্ছিত প্রতিবেশী হিসেবেই গণ্য করে।

রাশিয়া র বিরুদ্ধে সাধারণ লোকের প্রবল আবেগের পরিচয় পেয়েছিলাম যখন এক সুভেনির শপে আমাকে টয়লেট পেপার রোল বিক্রি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন বিক্রেতা। শুধু মাত্র বিশেষ কাজে ব্যবহৃত এই বস্তুটি সুভেনির হিসেবে কিনব কেন, সেই প্রশ্ন করাতে তিনি আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন একটা প্যাকেট। দেখলাম— প্রবল প্রতাপান্বিত পড়শি দেশের নেতার মুখের ছবি ছাপানো সেই টয়লেট পেপারের উপরে!

যুদ্ধের ডঙ্কা বাজতে শুরু করার পরে সেই বিশেষ ‘সুভেনির’-এর বিক্রি এখন নিশ্চয় আরও অনেক বেড়ে গিয়েছে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement