খোঁজ মিলেছিল অনেক আগেই। মরুভূমির তপ্ত বালির ভিতর থেকে খুঁড়ে বার করা হয়েছিল একাধিক মমি। কিন্তু কোথা থেকে এসেছিল, এত দিন তা জানা যায়নি।
প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে সেটি রহস্য হয়েই রয়ে গিয়েছিল। অনেকেরই ধারণা ছিল, ব্রোঞ্জ যুগের এই মানুষগুলো এক সময় পশ্চিমের দেশ থেকে অনেক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে চিনে এসেছিলেন।
মনে করা হয়েছিল, তাঁদের হাত ধরেই চাষাবাদ শিখেছে ওই অঞ্চল। কিন্তু ডিএনএ-র বিশ্লেষণ করে নতুন তথ্য হাতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
জানা গিয়েছে, পশ্চিমের দেশ থেকে সে দেশে আসেননি তাঁরা, বরং সে দেশেরই আদি বাসিন্দা। প্রতিবেশী গোষ্ঠী থেকেই চাষাবাদ শিখেছিলেন তাঁরা।
ডিএনএ-র বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, নয় হাজার বছর আগে এশিয়ায় বসবাসকারী প্রস্তর যুগের শিকারীরাই এঁদের পূর্বপুরুষ।
বিশ শতকের গোড়াতে চিনের জিংজিয়াং প্রদেশে মাটি খুঁড়ে এই মমিগুলি উদ্ধার হয়েছিল। জিংজিয়াং প্রদেশের তাকলামাকান মরুভূমির ওই অঞ্চল এক সময় কবরস্থান হিসাবে ব্যবহৃত হত। মরুভূমির অনেকটা অংশ জুড়ে ছড়িয়ে ছিল মমিগুলি।
নৌকোর মতো কাঠের তৈরি কফিনের মধ্যে কবর দেওয়া হত মৃতদেহগুলি। মরুভূমির শুষ্ক জলবায়ুতে সেগুলি প্রাকৃতিকভাবেই মমি হয়ে উঠেছে। এত বছর ধরে তাই অনেকাংশে অক্ষত রয়ে গিয়েছে। চুলের রং থেকে শুরু করে পোশাকও সহজেই চিহ্নিত করা যায়।
এক মহিলার মমি উদ্ধার ঘিরে মূলত বিজ্ঞানীরা বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। ওই মহিলার মাথায় উলের টুপি এবং গায়েও উলের জামা ছিল। পশ্চিমি সভ্যতার মানুষেরা এমন পোশাক পরতেন। সেটি দেখেই বিজ্ঞানীরা প্রথমে অনুমান করেছিলেন, পশ্চিম থেকে এখানে এসেছিল ওই গোষ্ঠী।
সম্প্রতি মমিগুলির ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখেছেন, পশ্চিমি মানুষের সঙ্গে তাঁদের জিনগত বিস্তর ফারাক রয়েছে। বরং পাঁচ হাজার বছর আগে মধ্য এশিয়ার বসবাসকারী গোষ্ঠীর সঙ্গে অনেক মিল রয়েছে।
সেই সমস্ত তথ্য দেখেই বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন পশ্চিম থেকে আগত অভিবাসী তাঁরা নন। চিনেরই আদি বাসিন্দা।