মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র
সাক্ষ্য গ্রহণ চলাকালীন তাঁর টুইট নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল শুরু হয়েছে। গত কাল মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের সামনে যিনি সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন, ইউক্রেনে আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত, সেই মারি ইয়োভানোভিচও সরাসরি জানিয়েছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুমকির মুখে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন তিনি। আজ আবার সোশ্যাল মিডিয়ার সেই পোস্ট নিয়েই মুখ খুলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মারিকে যে তিনি পছন্দ করছেন না, তা তাঁর টুইটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প আজ জানিয়েছেন, তাঁর লেখায় এমন কিছুই ছিল না, যা দেখে মনে হতে পারে যে তিনি মারিকে ভয় দেখাচ্ছেন।
আগামী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের অন্যতম প্রার্থী, জো বাইডেন ও তাঁর ছেলে হান্টার সম্পর্কে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনে যে কথোপকথন হয়েছিল, তা আদৌ ইমপিচমেন্ট যোগ্য অপরাধ কি না, তা নিয়ে গত বুধবার থেকে শুনানি শুরু হয়েছে হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে। ইতিমধ্যেই সেখানে সাক্ষ্য দিয়েছেন ইউক্রেনে বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম টেলর এবং ইউরোপীয় ও ইউরেশীয় সংক্রান্ত মার্কিন বিদেশ-সহ সচিব জর্জ কেন্ট। মারি হলেন তৃতীয় সাক্ষী। তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণের পরেই হোয়াইট হাউস থেকে একটি বিবৃতিতে দাবি করা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে কোনও ভুল কাজ করেননি, তা প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতের বয়ানের ভিত্তিতে স্পষ্ট। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব স্টেফানি গ্রিসহ্যাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে ত্রাণ বন্ধ করা নিয়ে কোনও তথ্য তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মারির কাছে ছিল না। এখন ইমপিচমেন্ট নিয়ে শুনানি আরও এগিয়ে নিয়ে চলা, সময়ের অপচয় বলেই ব্যাখ্যা করেছে হোয়াইট হাউস।
যদিও মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একাংশ আজই দাবি করেছে, জ়েলেনস্কি ও ট্রাম্পের ফোনালাপের যে কথ্যরূপ পাওয়া গিয়েছে, হোয়াইট হাউস এত দিন তার পুরোটা নিয়ে মুখ খোলেনি। ওই কথোপকথনে তেমন কিছুই নেই বলে হোয়াইট হাউস বারবার দাবি করলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক আধিকারিককে বিষয়টি নিয়ে এ কথাও বলতে শোনা গিয়েছে, যে ট্রাম্প যা বলবেন, জ়েলেনস্কি সেই মতোই কাজ করবেন। প্রকাশিত কথ্যরূপের সঙ্গে দুই প্রেসিডেন্টের ফোনালাপের মধ্যে গরমিল আছে বলেও গত কাল দাবি করেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একাংশ। যদিও হোয়াইট হাউস বিষয়টির দায় জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের ইউক্রেন বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলেকজ়ান্ডার ভিন্ডম্যানের দিকেই ঠেলেছে। গত সপ্তাহেই ইমপিচমেন্ট তদন্তকারীদের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন ভিন্ডম্যান। তিনিই ফোনালাপের কথ্যরূপ প্রকাশের দায়িত্বে ছিলেন। হোয়াইট হাউস আগে একাধিক বার দাবি করেছিল, গত এপ্রিলের সেই ফোনালাপে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরামর্শ মেনে ট্রাম্প জ়েলেনস্কির কাছে দুর্নীতি দমনের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইউক্রেন দুর্নীতিতে আপস করলে ত্রাণ দেওয়া বন্ধ করে দেবে আমেরিকা। কিন্তু গত কাল যে কথ্যরূপ প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আদৌ ফোনে সেই প্রসঙ্গ তোলেননি।