সাধারণের জন্য পরিষেবা চালু হল বৃহস্পতিবার। — ফাইল ছবি।
কেউ এসেছেন বরিশাল থেকে। কেউ আবার প্রথম যাত্রার সাক্ষী হতে চলে এসেছেন খুলনা থেকে। সেই সঙ্গে আছেন স্থানীয় মানুষও। সকলেই চান ঢাকা মেট্রোর প্রথম যাত্রার ঐতিহাসিক মুহূর্তকে আপন করে রাখতে। আর সেই আবদার মেটাতে গিয়েই বিগড়ে গেল টিকিট ভেন্ডিং মেশিন। টিকিট কাটতে না পেরে হতাশ বহু মানুষ।
বুধবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হয়েছে ঢাকা মেট্রোর। সবুজ পতাকা নেড়ে প্রথম ট্রেনটি ছাড়ার সঙ্কেত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সাধারণ মানুষ মেট্রোয় চড়তে পারেননি। বৃহস্পতিবার থেকে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় মেট্রোর ফটক। আর সেই প্রথম যাত্রার স্বাদ নিতে বাংলাদেশের আনাচকানাচ থেকে বহু মানুষ চলে এসেছেন রাজধানী ঢাকায়। কেউ এসেছেন প্রায় ২০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বরিশাল থেকে। কেউ বা খুলনা। শীতকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে মোটা চাদরে শরীর মুড়ে মেট্রোয় চড়তে তাঁরা হাজির ঢাকায়। স্বভাবতই, স্থানীয় ঢাকাবাসীর উন্মাদনাও চোখে পড়ার মত। কিন্তু সমস্যা বাঁধল টিকিট কিনতে গিয়ে। কাউন্টার থেকে হাতে হাতে টিকিট দেওয়ার পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকা মেট্রোয় টিকিট কেনার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাও আছে। কিন্তু প্রথম দিন বিপুল চাহিদা সামাল দিতে গিয়ে বিগড়ে গিয়েছে কয়েকটি টিকিট ভেন্ডিং মেশিন। ফলে টিকিট কিনতে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। এ ভাবে দেখতে দেখতেই চোখের সামনে দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে প্রথম মেট্রো। ও দিকে টিকিটের লাইনের দৈর্ঘ বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পরিস্থিতি এমন যে তা ছাড়িয়ে গিয়েছে কয়েক কিলোমিটার।
বাংলাদেশের দৈনিক সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভেন্ডিং মেশিনে কেউ আবার যাত্রার জন্য টিকিট কার্ড পেলেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। তাঁদের নাম, মোবাইল নম্বর এবং টাকার পরিমাণ লিখে রাখা হচ্ছে। পরবর্তী সময় তাঁদের ফোন করে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
বরিশাল থেকে প্রথম মেট্রোয় চড়তে উত্তরা এসেছেন মহম্মদ শামীম। ভেন্ডিং মেশিনের সামনে ঠায় ২০ মিনিট দাঁড়িয়েও টিকিট পাননি। অগত্যা কয়েক কিলোমিটার পিছিয়ে গিয়ে হাতে হাতে টিকিটের লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে তাঁকে। তার মধ্যেই হুইসিল দিয়ে ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গিয়েছে প্রথম মেট্রো। ‘ঢাকা ট্রিবিউন’-য়ের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সমস্যার কথা স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানেন এবং দ্রুত তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে ঢাকা মেট্রোর নির্মাণ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, ‘‘টিকিটের ক্ষেত্রে প্রথম দিন কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। যাত্রীর চাপ অনেক, তাঁদের বুঝতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে সব ঠিক হয়ে যাবে।’’