plane fall

Afghanistan plane fall: আকাশ থেকে ছাদে আছড়ে পড়েছিল দুই দেহ, দেখে জ্ঞান হারান বাড়ির মালকিন

সালেক প্রথমে ভেবেছিলেন দু’জনেই তালিবান জঙ্গি। প্লেন থেকে মেরে হয়তো ফেলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। পরে তাঁদের পোশাক তল্লাশি করে পরিচয় জানা যায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কাবুল শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২১ ১৭:৫৯
Share:

কাবুল বিমানবন্দরে প্লেন থেকে খসে ওয়ালি সালেকের বাড়ির ছাদে পড়েছিলেন দুই আফগান সহোদর। ডানদিকে, এক সংবাদ সংস্থার সঙ্গে ভিডিয়ো কলে ঘটনাটি জানাচ্ছেন সালেক। ছবি: সংগৃহীত

কাবুলে প্লেন থেকে খসে পড়তে দেখা গিয়েছিল দুই আফগানকে। তাঁরা কোথায় গিয়ে পড়েছিলেন, তার উত্তর বৃহস্পতিবার পাওয়া গেল। কাবুল বিমানবন্দর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে একটি বাড়ির ছাদে আছড়ে পড়ে দু’টি দেহ। এতটাই শব্দ হয়েছিল তার যে প্রতিবেশীরা ভেবেছিলেন বিস্ফোরণ হয়েছে হয়তো। ‘ভুল’ ভাঙে বাড়ির মালিক ছাদে যাওয়ার পর। দেখা যায় ছাদে পড়ে রয়েছে রক্তাক্ত দু’টি দেহ। দু’জনেরই বয়স কম। তবে তাঁদের মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিল। পেট ফেটে বেরিয়ে এসেছিল নাড়িভুঁড়ি।

Advertisement

বিমানবন্দরের নিকটেই ওই জয়গাটির নাম খ্যায়ের খানা। সেখানেই দোতলা বাড়ি বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মী ওয়ালি সালেকের। সোমবার দুপুরে যখন ঘটনাটি ঘটে তখন সালেক বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন । তাঁর দুই কন্যা ছিলেন রান্নাঘরে। ঘুমোচ্ছিলেন দুই ছেলে। প্রবল শব্দে চমকে ওঠেন প্রত্যেকে। সালেক বলেছেন, ‘‘বাড়ির দেওয়াল থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছিল। আওয়াজ শুনে দৌড়ে ছাদে যাই। সেখানেই দেখি ওই দৃশ্য।’’ সালেকের স্ত্রী জাকিয়া সালেকও এসেছিলেন স্বামীর পিছনে। প্রায় বিকৃত হয়ে যাওয়া দেহ দু’টি দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন জাকিয়া। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জ্ঞানও হারান। সালেক বলেছেন, ‘‘গোটা ছাদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল রক্ত আর শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। ওই দৃশ্য দেখা যাচ্ছিল না।’’

ভারতের এক বেসরকারি সংবাদসংস্থাকে ভিডিয়ো কলে বাড়ির ছবি দেখিয়েছেন সালেক। পাঠিয়েছেন মৃতদেহ দু’টির ছবিও। তবে অন্য একটি সংবাদ সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, মৃত দুই আফগান আসলে দুই সহোদর। তাঁদের নাম কবীর এবং রেজা। তাঁদের পরিবার রেজার দেহ খুঁজে পেলেও কবীরের দেহ পায়নি। যদিও ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সালেকের সাক্ষাৎকার অনুযায়ী দু’জনেরই দেহ নিয়ে গিয়েছে তাদের পরিবার।

Advertisement

দেহদু’টি ছাদে পড়ার পর খসে পড়ে সালেকের বাড়ির দেওয়ালের পলেস্তারা। ছবি: সংগৃহীত।

সালেক জানিয়েছেন, মৃত দুই যুবকের এক জনের বয়স ২৫। নাম শাফিউল্লা হোতাক। অন্যজন ২০ বছরের। নাম ফিদা মহম্মদ। বাড়ি কাবুলের কাছে পাঘমানে। তাঁদের পোশাক পরীক্ষা করে জন্মের শংসাপত্র পেয়েছিলেন সালেক। তাতে লেখা ছিল ঠিকানাও। তা দেখেই দু’জনের বাড়িতে খবর দেন সালেক। চাদরে দেহ মুড়ে বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে একটি মসজিদে রেখে এসেছিলেন সালেক। সঙ্গে ছিলেন ১০ -১২জন প্রতিবেশীও। সেখান থেকেই তাঁদের দেহ নিয়ে যান দুই যুবকের পরিবার।

সালেক অবশ্য প্রথমে ভেবেছিলেন ওই দুই যুবক তালিবান। প্লেন থেকে মেরে হয়তো ফেলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। পরে জন্মের শংসাপত্র দেখে ভুল ভাঙে।

বাড়ি থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে কাবুলে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন সালেক। সোমবার সন্ধে ৬টা থেকে শিফট ছিল তাঁর। রাতে বাড়ি ফিরে জানতে পারেন মসজিদ থেকেই দুই আফগান ভাইয়ের দেহ নিয়ে গিয়েছে তাঁদের পরিবার। তবে সোমবারের ঘটনা যে কোনও দিন ভুলতে পারবেন না তা সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সালেক। বলেছেন, ‘‘বিমানবন্দরের কাছে বাড়ি। মাঝেমধ্যেই অদ্ভুত শব্দ শুনতে পাই। অনেকবার ভেবেছি প্লেন থেকে যদি কেউ ডলার ভর্তি ব্যাগ ফেলে দেয়, কী ভাল হয়। কিন্তু তার বদলে এসে পড়ল দেহ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement