হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা তাঁর নেই। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ তাঁকে ইমপিচ করার প্রস্তাব আগেই পাশ হয়ে গিয়েছিল। এ বার উচ্চকক্ষ সেনেটে সেই প্রস্তাব পৌঁছল। ক্যাপিটল হামলায় উস্কানি জোগানোর অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব সোমবার সেনেটে জমা দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা।
ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাব সেনেটে পাশ হলে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হবে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তা নিয়ে শুনানি শুরু হবে সেনেটে। কিন্তু রিপাবলিকানদের তরফে বিষয়টি নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই ঢিলেমি করা হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কারণ ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রিপাবলিকানদের অনেকেই।
শুধু তাই নয়, ট্রাম্প বার বার নির্বাচনী ফলাফল উল্টে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন বলেই তাঁর সমর্থকরা ক্যাপিটলে হামলা চালায়, এমন দাবিও মানতে নারাজ রিপাবলিকানরা। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনও রকম পদক্ষেপ করার পক্ষপাতী নন তাঁরা। কারণ এতে একনিষ্ঠ ট্রাম্প সমর্থকরা দলের উপর চটে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যে কারণে রিপাবলিকান সেনেটর জন করনিন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কংগ্রেস যদি পূর্বতন সরকাররে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে প্রক্রিয়া শুরু করে, সে ক্ষেত্রে তো বারাক ওবামার বিরুদ্ধেও চার্জ গঠন করতে হয়।’’
নির্বাচনী পরাজয়ই ট্রাম্পের জন্য যথেষ্ট শাস্তি বলেও মন্তব্য করেন করনিন। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের নজরে ট্রাম্প তো ইতিধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। নির্বাচনী পরাজয় শাস্তির মধ্যেই পড়ে।’’ তবে করনিনের এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বলা হচ্ছে, গত ৪ বছরে ট্রাম্পের উপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল রিপাবলিকান পার্টি। কিন্তু ক্যাপিটল হামলার পর আর্থিক অনুদান যখন বন্ধ হওয়ার পথে, সেই সময় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে দলের উপরও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন রিপাবলিকানরা।
তবে ডেমোক্র্যাটরাও নাছোড়বান্দা। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত বলে ইতিমধ্যে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। এই মুহূর্তে সেনেটে ডোমোক্র্যাটদের প্রয়োজনীয় সদস্য থাকার কথা, তাই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হতে খুব একটা ঝক্কি সামলাতে হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ শুরু হতে পারে। তাতে ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-সহ কোনও সরকারি পদে আর কখনও দাঁড়াতে পারবেন না ট্রাম্প।