জো বাইডেন। ছবি রয়টার্স।
হোয়াইট হাউসের সিঁড়ির শেষ ধাপে দাঁড়িয়ে আছেন জো বাইডেন। আর আমেরিকার সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার শেষ ধাপে তাঁর দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। জর্জিয়া প্রদেশের দু’টি আসনের একটিতে ইতিমধ্যেই জিতে গিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। অন্য আসনটি জিতলেই তারা সেনেটের দখল পাবে। আর তা হলেই আমেরিকার কংগ্রেসের দুই কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পথ অনেকটাই মসৃণ হয়ে যাবে বাইডেনের সামনে।
কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে আজই নির্বাচনে জয়ের শংসাপত্র পেতে চলেছেন বাইডেন। ৩০৬টি ইলেক্টোরাল ভোট পাওয়ার পরে সেই প্রক্রিয়া এখন নিয়মরক্ষা মাত্র। তা সত্ত্বেও বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের উপরে খোলাখুলি চাপ বাড়িয়ে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটারে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আজ লিখেছেন, ‘‘অনিয়ম আর জালিয়াতির ভোটের সংশোধন চাইছে প্রদেশগুলো। দুর্নীতির এই প্রক্রিয়া কখনওই আইনসভার সম্মতি পায়নি। মাইক পেন্সকে এখন সেগুলো (ফলাফল) তাদের কাছেই ফেরত পাঠাতে হবে। আমরা জিতব। করে ফেলো মাইক, এটা সাহস দেখানোর সময়।’’
পেন্সকে চাপ দিচ্ছেন কেন ট্রাম্প? আসলে আইন অনুযায়ী এই যৌথ অধিবেশনে পৌরোহিত্য করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। প্রতিটি প্রদেশের ফলাফল তিনি ঘোষণা করে জানতে চাইবেন, কংগ্রেসের আপত্তি আছে কি না। ট্রাম্প কিন্তু মনে করেন, ভোটের ফলাফল উল্টে দিতে পারেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। টুইটারেও তিনি লিখেছেন, ‘‘জালিয়াতি করে নির্বাচিত হওয়া ইলেক্টরদের বাতিল করার ক্ষমতা আছে ভাইস প্রেসিডেন্টের।’’
কিন্তু পেন্স কি তা করবেন? আমেরিকার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, না। গত চার বছরে প্রেসিডেন্টের অনুগত থেকেছেন তিনি। এখনও ট্রাম্পের পাশেই আছেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিক রীতির বাইরে তিনি বেরোবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, এই কথা ট্রাম্পকে জানিয়েও দিয়েছেন পেন্স। অবশ্য ১১ জন রিপাবলিকান সেনেটর আগে জানিয়েছিলেন, বাইডেনের শংসাপত্র অনুমোদনের ভোটে আপত্তি তুলে অনুপস্থিত থাকবেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিতর্ক হতে পারে কংগ্রেসে। কিন্তু হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর বেশ কিছু রিপাবলিকান সেনেটর বাইডেনের পাশে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এই অবস্থায় ডেমোক্র্যাটদের কাছে বাড়তি অক্সিজেন হয়ে এল জর্জিয়ার সেনেটের আসনে জয়। এই প্রদেশের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সেনেটর হিসেবে কংগ্রেসে আসতে চলেছেন প্যাস্টর রাফায়েল ওয়ারনক। নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে জর্জিয়ায় কেউ নির্ধারিত ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। তাই আবার ভোট হচ্ছে। দু’টি আসনই ছিল রিপাবলিকানদের দখলে। একটিতে বর্তমান সেনেটর কেলি লফলারকে হারিয়ে জিতেছেন ওয়ারনক। অন্যটিতে সর্বশেষ গণনা পর্যন্ত সেনেটর ডেভিড পার্ডুর থেকে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জন অসফ।
যৌথ অধিবেশন যখন চলবে, তখন ওয়াশিংটনের জনসভায় বক্তৃতা দেবেন ট্রাম্প। আদতে এটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের প্রতিবাদসভা। তাঁর কয়েক হাজার সমর্থক রাজধানীতে এসেছেন। ট্রাম্পের দাবি, ‘চুরি করা’ নির্বাচন এঁরা দেখতে চাননি। টুইটার কর্তৃপক্ষ যদিও ট্রাম্পের টুইটের নীচেই লাল অক্ষরে লিখে দিয়েছেন, ‘‘নির্বাচন জালিয়াতি নিয়ে এই দাবি বিতর্কিত।’’