পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ছবি- ফেসবুকের সৌজন্যে।
দিল্লিতে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আহ্বান জানানোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই টুইটে পরোক্ষে ওই ঘটনা নিয়ে ভারতকে খোঁচা দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। লিখলেন, গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেই এমন ধরনের ঘটনার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, হিংসার ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত বছর জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পর। টুইটে অবশ্য দিল্লির নামোল্লেখ করেননি।
বুধবার টুইটে ইমরান লিখেছেন, ‘‘ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরের ঘটনার পরেই আমি গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বলেছিলাম, বোতল থেকে দৈত্যটা বেরিয়ে পড়ল। এ বার রক্তপাত আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলাম। যার সূত্রপাত হয়েছিল কাশ্মীরে। ভারতে থাকা ২০ কোটি মুসলিম এখন লক্ষ্য়বস্তুতে পরিণত হয়েছেন। এটা রুখতে গোটা বিশ্বকে এ বার এগিয়ে আসতে হবে।’’
সিএএ-বিরোধী ও সিএএ-পন্থীদের সংঘর্ষে গত চার দিন ধরে অগ্নিগর্ভ দিল্লি। অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে পাকিস্তানে না ঘটে, টুইটে সেই আহ্বানও জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। লিখেছেন, ‘‘আমি সকলকে সতর্ক করে দিতে চাই, পাকিস্তানে যাঁরা অ-মুসলিম ও তাঁদের ধর্মস্থানের উপর হামলা করতে উদ্যত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশে সংখ্যালঘুরা নাগরিকত্বের সমানাধিকারই পান।’’
ও দিকে, দিল্লির সংঘর্ষের দায় নিয়ে এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফা দাবি করেছেন সনিয়া গাঁধী। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে সনিয়া একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দিকে।
এ দিন তিনি বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোথায় ছিলেন? কী করছিলেন তিনি? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখেও কেন আগে থেকে আধাসেনা ডাকা হল না?’’
১৪৪ ধারা, কার্ফু জারি করেও দিল্লিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে দিল্লি পুলিশের ভূমিকায়। দিল্লির আইনশৃঙ্খলার ভার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উপর। আর সেই মন্ত্রকের দায়িত্বে অমিত শাহ। সংঘর্ষ এত বড় আকার নেওয়ার জন্য শাহকেই নিশানা করে সনিয়া এ দিন বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ গোটা কেন্দ্রীয় সরকারই এর জন্য দায়ী। অমিত শাহের ইস্তফা দিন, এই দাবি করছে কংগ্রেস।’’
আরও পড়ুন: নীরবতা ভাঙলেন মোদী, দিল্লিতে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আর্জি
আরও পড়ুন: দিল্লির সংঘর্ষে গোয়েন্দা অফিসারের মৃত্যু, চাঁদ বাগে মিলল দেহ
দিল্লির সংঘর্ষের জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এই সংঘর্ষের পিছনে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে। দিল্লির ভোটের সময় দেশবাসী সেটা দেখেছে। অনেক বিজেপি নেতা উস্কানিমূলক মন্তব্য করে ভয় ও হিংসার পরিবেশ তৈরি করেছে। এমনকি, গত রবিবারও এক বিজেপি নেতা একই রকম মন্তব্য করেছেন।’’