বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।—ফাইল চিত্র।
‘আত্মনির্ভরতা’র সঙ্গে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর কোনও সংঘাত নেই। জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পর বিশ্বের কাছে এই বার্তা দিতেই ব্যস্ত নয়াদিল্লি।
প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তৃতায় ঘুরেফিরে এসেছে আত্মনির্ভরতার প্রসঙ্গ। অন্যের মুখাপেক্ষী না থেকে দেশজ উৎপাদন বাড়ানোর ডাক দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, স্থানীয় পণ্যকে বিশ্বমানের ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে গলা ছেড়ে প্রচার করার কথা। তবে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে যে ভুল বার্তা যেতে পারে, সে কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পর টুইট করে জানিয়েছেন, “আমাদের বৃদ্ধি ঘটবে ঠিকই, কিন্তু সেই বৃদ্ধি ঘটবে গোটা বিশ্বের সঙ্গেই। পৃথিবী যে ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য লড়ছে, তাতে আমাদের অবদান থাকবে।”
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও বোঝাতে চেয়েছেন, আত্মনির্ভরতার অর্থ গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চলা নয়। বিশ্বের সঙ্গে আত্মীয়তার কথাই বলেছেন মোদী। বলেছেন, ভারতের বসুধৈব কুটুম্বকম-এর সুপ্রাচীন আদর্শের কথা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কী ভাবে দেশি পণ্যকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে, আত্মনির্ভরতা বাড়ানো হবে, অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে নতুন কোনও নীতি অনুসরণ করা হবে কি না— সেই বিষয়গুলি আদৌ স্পষ্ট নয়।
২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্টের আসনে বসার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তাঁর সংরক্ষণবাদের নিন্দা করে এসেছে ভারত। ফলে এখন আত্মনির্ভরতার সংলাপ বিশ্ববাসীর সামনে গ্রহণযোগ্য করে তোলারও একটা দায় প্রধানমন্ত্রীর থেকে যাচ্ছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাব্লিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসি-র অর্থনীতিবিদ লেখা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘১৯৯১-এর পর থেকে আমাদের অর্থনীতি খুলেছি। তা অনেকটাই বাইরের অর্থনীতির
উপর ভিত্তি করে চলে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণবাদী হলে লাভ হবে কি না, সেটা দেখার বিষয়।’’