নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে হাউস হাতছাড়া হলেও, সেনেট নিজেদের দখলে রেখেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল। কাল সেখানেই জো়ড়া ধাক্কা খেলেন মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট। আর আলাদা ভাবে সুর চড়ানো নয়। ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি আরবের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে ট্রাম্পকে এ বার স্পষ্ট ‘না’ বলল মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ। দ্বিতীয় ধাক্কাটাও এল সৌদি প্রসঙ্গেই। সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুনে গোড়া থেকেই সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনকে (এমবিএস) আড়াল করার চেষ্টা করছেন প্রেসিডেন্ট। শাসক ও বিরোধী দলের সেনেটররা এ দিন একজোট হয়ে এমবিএস-কেই কাঠগড়ায় তুললেন।
এখানেই শেষ নয়! কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসেও যাতে এ নিয়ে ভোটাভুটি হয়, তারও দাবি তুলল মার্কিন সেনেট। খাশোগি খুনের তদন্তে সিআইএ যে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছিল, তা উড়িয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘সৌদি রাজ পরিবারের যোগ এখনও তেমন পোক্ত নয়। তদন্ত এখনও বিস্তর বাকি।’’ কিন্তু সেনেটররা বেঁকে বসলেন। গত সপ্তাহে সিআইএ প্রধান জিনা হ্যাসপেলের দেওয়া তদন্ত-ব্রিফিং শোনার পর থেকেই তাঁদের এমনটা মনে হয়েছে বলে জানান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম।
সৌদি রাজ পরিবারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগিকে গত ২ অক্টোবর খুন করা হয়েছিল ইস্তানবুলের সৌদি কনসুলেটে। এমবিএসের নির্দেশেই সে দিন রিয়াধ থেকে হিট স্কোয়াড গিয়েছিল বলে প্রথম থেকে দাবি করে আসছে তুরস্ক। ঘটনার আড়াই মাস পরেও খাশোগির দেহ মেলেনি। সাংবাদিক হিসেবে তিনি আমেরিকার এক সংবাদমাধ্যমেই কাজ করতেন। ট্রাম্প তবু কেন সৌদি রাজ পরিবারকে আড়াল করছেন, প্রশ্নটা ঘুরছিল। কাল ব্যালটেই মোক্ষম বিঁধলেন সেনেটররা।
দিন পাঁচেক আগে মার্কিন বিদেশ দফতর জানিয়েছিল, ইয়েমেনের যুদ্ধে তারা সৌদি আরবের পাশেই থাকতে চায়। এ দিন সেনেট বলল ‘না’। ইরান-সমর্থিত হুথি জঙ্গিদের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন সেনা জোটের চার বছরের যুদ্ধে ইয়েমেনের পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। সেই যুদ্ধে না জড়ানোর পক্ষে সেনেট নভেম্বরেই সুর চড়িয়েছিল। এ দিন ছবিটা আরও স্পষ্ট হয়ে গেল। আগামী বছর ট্রাম্পের সৌদি-নীতিতেও যার প্রভাব পড়তে বাধ্য বলে দাবি করেছেন সেনেটররা।