ত্রাণের কাজে সেনার সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কের অ্যাডেনার বিমানঘাঁটিতে। ছবি: রয়টার্স।
ধ্বংসস্তূপ থেকে বার হয়েছিল এক বেড়াল। সেই মার্জারমশাই এখন আর উদ্ধারকর্তা আলি কাকাসকে ছেড়ে যেতে চাইছে না। তুরস্কের ভূকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন যে সব দমকলকর্মী, কাকাস তাঁদেরই এক জন। কাকাস ও তাঁর বেড়ালের এই কাহিনি টুইট করেছেন ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মন্ত্রণাদাতা আন্তন গেরাশেঙ্কো। সূত্রের খবর, যুদ্ধবিধ্বস্ত কিভ থেকে যে ৮৮ জন সেনা তুরস্কে উদ্ধারকাজে এসেছেন, তাঁদেরই কারও থেকে কাকাসের খবর পেয়ে সমাজমাধ্যমে জানান গেরাশেঙ্কো। তাঁর সেই টুইট ভাইরাল হয়েছে।
টুইটারে গেরাশেঙ্কো কাকাস ও বেড়ালটির ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এই বেড়ালটিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করার পরে ও আর উদ্ধারকারীর ঘাড় থেকে নামতেই চাইছে না।’। কিছু ক্ষণ পরে আর একটি টুইটে গেরাশেঙ্কো লেখেন, ‘জানতে পেরেছি, ওই উদ্ধারকারীর নাম আলি কাকাস। তিনি তুরস্কের এক দমকলকর্মী। বেড়ালটিকে তিনিই পুষছেন। নাম রেখেছেন এনকাজ়, যার অর্থ— ধ্বংসস্তূপ।’
উদ্ধারকর্মী আলি কাকাসের সঙ্গে পোষ্য এনকাজ়। ছবি: টুইটার।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমান, শুধু তুরস্কেই ভেঙে পড়েছে ২ লক্ষ ৬৪ হাজার বাড়ি। সিরিয়াতেও অন্তত হাজার পঞ্চাশেক বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে অনুমান আন্তর্জাতিক ত্রাণকর্মীদের। দু’টি দেশ মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার পেরিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে যে আরও কত হাজার মানুষ চাপা পড়ে রয়েছেন, তার কোনও পরিসংখ্যানই নেই। ভূমিকম্পের ১২ দিন পরেও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রাণের সন্ধান পাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। তুরস্কে আজ এমন বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে জীবিতের থেকে অনেক বেশি মিলছে মৃতদেহ। এই দু’টি দেশে এখন সব থেকে প্রয়োজন কবরস্থানের, বলছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। কারণ নিকটজনকে সমাহিত করার জায়গাই পাচ্ছে না দুর্গত পরিবারগুলি। যাঁরা বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদেরও খাবার, পানীয় জল ও ওষুধ সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠনগুলি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, অন্তত ২ কোটি ৬০ লক্ষ ভূমিকম্প-দুর্গতের অবিলম্বে আরও ত্রাণ প্রয়োজন।
এ দিকে, বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প (ডব্লিউএফপি) আজ জানিয়েছে, বিরোধী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় ত্রাণ সরবরাহ করতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন ডব্লিউএফপি কর্মীরা। সংগঠনের পক্ষ থেকে আঞ্চলিক প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে তাদের কাজে বাধা না-দেওয়া হয়।