ইরানে কাসেম সোলেমানির শেষ যাত্রায় লাখ লাখ মানুষের ভিড়। ছবি: এএফপি
মার্কিন ড্রোন হানায় নিহত ইরানের সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেমানির শেষ যাত্রাতেও দাবি উঠল ‘বদলা’র। ‘আমেরিকা নিপাত যাক’ স্লোগানে কার্যত ভেসে গেল ইরাকের রাজপথ। আজ রবিবার ইরানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে ইরানে। সোলেমানির হত্যার পর নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা বেড়েছে। নতুন করে ইরান-আমেরিকা ছায়াযুদ্ধের আশঙ্কাও দেখছেন অনেকে।
শুক্রবার ভোরে বাগদাদ বিমাবন্দরের কাছে ড্রোন হামলা চালায় আমেরিকা। তাতে নিহত হন ইরানের রেভোলিউশারি গার্ডের নেতা সোলেমানি। তাঁর সঙ্গেই মৃত্যু হয় আধাসেনা বাহিনী হাশদ-আল-শাবির নেতা তথা সোলেমানির অন্যতম পরামর্শদাতা আল মুহান্দিস-সহ মোট ন’জনের। শনিবার তাঁদের কফিন নিয়ে বিশাল পদযাত্রা হয় ইরাকে। রবিবার ইরানেও একই ভাবে শেষকৃত্যের আগে বিশাল পদযাত্রায় অংশ নেন বহু মানুষ।
রাজধানী বাগদাদ শহর থেকে শুরু হয় পদযাত্রা। ইরাকের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মেহদি সেই পদযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন কিছু সময়ের জন্য। এ ছাড়া ইরানপন্থী বহু রাজনৈতিক নেতার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সুলেমানির পোস্টার, ব্যানার হাতে কয়েক লক্ষ মানুষ পদযাত্রায় শামিল হন। কফিনগুলি প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তর বাগদাদের একটি শিয়া তীর্থস্থানে। সেখান থেকে বিশাল পদযাত্রা যায় কারবালা শহরে। সোলেমানি বাদে অন্য নিহতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নজফ শহরে। তার পরেই সুলেমানির মরদেহ পাঠানো হয় ইরানে।
বিপুল সংখ্যায় সাধারণ মানুষ ও রাজননৈতিক নেতাদের উপস্থিতির পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য ছিল আমেরিকা-বিরোধী স্লোগান, ব্যানার, পোস্টার। কেউ প্রতিশোধ নেওয়ার দাবি তুলেছেন। কেউ আবার সরাসরি যুদ্ধের হুঙ্কার ছেড়েছেন ইরাকে শেষযাত্রার মিছিল থেকেই। ফলে ইরানের পাশাপাশি ইরাকেও আমেরিকা-বিরোধী একটি জনমত তৈরির আশঙ্কা দেখছে কূটনৈতিক মহল। পাশাপাশি ইরান-মার্কিন ছায়াযুদ্ধ আরও তীব্র হবে বলেও মনে করছেন অনেকে।
ইরান ইতিমধ্যেই যুদ্ধের জিগির তুলেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জে ইরানের দূত মজিদ তখত রাভানচি বলেছেন, ‘‘সামরিক অভিযানের জবাব সামরিক অভিযানেই দেওয়া হবে। কোথায়, কখন— সেটা ভবিষ্যতে দেখা যাবে।” আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, আমেরিকার উপর হামলা হলে ইরানের ৫২টি জায়গায় হামলা করা হবে। সেই জায়গাগুলিও বেছে রাখা হয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি।