ডেভিড কার্ড, জোশুয়া ডি অ্যাংরিস্ট এবং গুইডো ডব্লিউ ইমবেনস। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
অর্থনীতি বিজ্ঞানে অবদানের কারণে ২০২১-এ তিন আমেরিকান অর্থনীতিবিদ একত্রে পেলেন আলফ্রেড নোবেল স্মারক পুরস্কার। তাঁরা যথাক্রমে ডেভিড কার্ড, জোশুয়া ডি অ্যাংরিস্ট এবং গুইডো ডব্লিউ ইমবেনস।
ডেভিড কার্ড (জন্ম ১৯৫৬) এক জন শ্রম-অর্থনীতিবিদ। তিনি আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে-র অর্থনীতির অধ্যাপক। জোশুয়া অ্যাংরিস্ট (জন্ম ১৯৬০) জন্মসূত্রে ইজরায়েলি। তিনি আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-র অর্থনীতির অধ্যাপক। গুইডো উইলহেলমস ইমবেনস (জন্ম ১৯৬৩) জন্মসূত্রে ওলন্দাজ। তিনি আমেরিকার পিয়ার রিভিউ অর্থনীতি বিষয়ক পত্রিকা ‘ইকনোমেট্রিকস’-এর বর্তমান সম্পাদক। ইতি পূর্বে অধ্যাপনা করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে।
সুইডিশ অ্যাকাডেমির তরফে জানানো হয়েছে, ডেভিড কার্ডকে পুরস্কৃত করা হয়েছে ‘শ্রম-অর্থনীতিতে তাঁর অভিজ্ঞতালব্ধ অবদানের কারণে’। এবং বাকি দুই অর্থনীতিবিদকে ‘কার্য-কারণগত সম্পর্ক বিন্যাস সংক্রান্ত বিশ্লেষণের বিষয়ে পদ্ধতিগত অবদানের জন্য’ নোবেল পুরস্কার দেওয়া হল।
ডেভিড কার্ড ১৯৯০-এর দশকে ন্যূনতম মজুরি বিষয়ে অর্থনীতির বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত ধারণার সমালোচনা করে নজর কাড়েন। পরে অভিবাসন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে তিনি গবেষণা করেন। বিভিন্ন অভিবাসী গোষ্ঠীর উপরে নিরীক্ষা চালিয়ে কার্ড দেখান যে, অভিবাসনের ফলে কোনও দেশের অর্থনীতি তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। আমেরিকা ও কানাডার বিভিন্ন সময়ের অভিবাসন বিশ্লেষণ করে তিনি দেখান, এর ফলে দুই দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তাঁর বক্তব্য আমেরিকার শ্রমবাজারে বাইরের শ্রমের অনুপ্রবেশের স্বপক্ষে কথা বলে।
এক বছরের জন্য যদি কোনও শিক্ষার্থীগোষ্ঠীকে বাধ্যতামূলক করা হয় (এবং অন্য গোষ্ঠীগুলিকে এর বাইরে রাখা হয়), তা হলে দেখা যাবে, সেই বিশেষ গোষ্ঠীভুক্ত প্রত্যেক পড়ুয়ার কাছে এই ব্যবস্থার প্রভাব সমান ভাবে পড়ছে না। কিছু পড়ুয়া তাতে উপকৃত হলেও অনেকেই হবে না। এই না-হওয়াদের দল পুরো গোষ্ঠীর পরিচয় বহন করতে পারে না। নিরীক্ষার ‘ফল’ হিসেবে শুধুমাত্র তাদের অভিজ্ঞতাকেই তুলে ধরা যায় না। এই বিষয়ে পদ্ধতিগত সমস্যাগুলির সমাধান করছেন অ্যাংরিস্ট এবং ইমবেনস। ১৯৯০-এর দশকে তাঁদের এই কাজ বিপুল পরিবর্তন আনে পরিসংখ্যান থেকে লাভ করা সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে।
সুইডিশ অ্যাকাডেমির প্রাইজ কমিটির প্রধান পিটার ফ্রেডেরিকসন জানিয়েছেন, সমাজের অন্তস্তলের সমস্যা নিয়ে কার্ডের গবেষণা এবং অর্থনীতির পদ্ধতিগত আলোচনার ক্ষেত্রে অ্যাংরিস্ট এবং ইমবেনসের কাজ জ্ঞানজগৎকে সমৃদ্ধ করেছে। বেশ কিছু ভিত্তিগত প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছে, যা সমাজের অশেষ উপকার করেছে।
অ্যাকাডেমি প্রদত্ত পুরস্কারের অর্থমূল্য এ বছর ভাগ করে দেওয়া হবে তিন অর্থনীতিবিদের মধ্যে।