প্রতীকী ছবি।
পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নাও নিতে পারে কোভিড। এমনকি ওমিক্রনকেই এর শেষ রূপ হিসেবে মেনে নেওয়াও বোকামি হবে। একাধিক নতুন রূপে বারবার হানা দিতে পারে এই ভাইরাস। এমনটাই ধারণা অনেক অতিমারি বিশেষজ্ঞদের। তাই এখনই সমস্ত বিধি না ভুলে কোভিড নিয়ে নিরাপত্তা মেনে চলারই নিদান দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
এই বিষয়ে ইয়েল স্কুল অব মেডিসিন-এর অতিমারি বিশেষজ্ঞ আকিও ইওয়াসাকি বলেন, ‘‘এই ভাইরাস কিছু মাস ছাড়া ছাড়াই মানুষের জীবনে আঘাত হানছে। আমরা যখন ডেল্টা ভাইরাসের বিরুদ্ধে বুস্টার টিকার কার্যকরিতা নিয়ে মাতামাতি করছিলাম, ঠিক তখনই ওমিক্রন আঘাত হানে।’’
ওমিক্রনই কোভিডের শেষ রূপ হবে এবং এই রূপ মানবজীবনে বিশেষ প্রভাব ফেলবে না, এই যুক্তি বিভিন্ন দিক দিয়ে ক্রুটিপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেছেন হিউস্টনের বেলর কলেজ অব মেডিসিনের ন্যাশনাল স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রধান পিটার হোটেজ। এই ভাইরাস যতবার নিজেদের জিনগত পরিবর্তন ঘটাবে, ততদিন পর্যন্ত নতুন রূপ হানা করবে বলেও তাঁর দাবি।
বিশেষজ্ঞেরা আরও জানিয়েছেন, সব দেশ করোনা সংকট থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত করোনা বিদায় নেবে এই ভাবনা অনর্থক। ধনী দেশগুলিতেও করোনার হানা দেশগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে দিয়েছে। ওমিক্রনের হানার ফলে বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ার পাশাপাশি আমেরিকার মতো উন্নত দেশে মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ওমিক্রন কম প্রাণ কাড়বে এই ধারনাও ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে। আর সেই কারণেই নতুন কোনও রূপের উদ্ভব ঘটতে পারে এবং তা ডেল্টা রূপের থেকেও ভয়ানক হতে পারে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি একজন ব্যক্তির একবার করোনা হলে তিনি দ্বিতীয়বার আর কোভিড আক্রান্ত হবেন না, এই ধারণা ঠিক নয় বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
ইতিমধ্যেই করোনার স্ফীতি কমতে শুরু করায়, বিভিন্ন দেশ তাদের করোনা বিধিনিষেধ আলগা করতে শুরু করেছে। করোনা নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও গাফিলতি দেখাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার। মানুষও করোনা নামে কিছু আছে বলে তা প্রায় ভুলে বসে আগের জীবনে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে প্রাণপণ। এ ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তাদের জনগণকে কোভিড-কে জীবনের অঙ্গ হিসেবে মেনে নিয়েই জীবনযাপন করার পরামর্শ দিয়েছে। তবে করোনা নিয়ে এই উদাসীনতা ক্ষতিকারক প্রমাণিত হতে পারে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।
ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকায় দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনার নয়া উপরূপ বিএ-২। এই নয়া উপরূপ দক্ষিণ আফ্রিকায় আবার করোনা স্ফীতি তৈরি করতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এই দেশের বিশেষজ্ঞেরা।