international news

হতদরিদ্রের সংখ্যা দেড় গুণ ছাপিয়ে হবে ১১২ কোটি, ১০ কোটি ভারতে, বলছে গবেষণা

গবেষণাপত্রটি শুক্রবার প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে থাকা ‘ইউএনইউ-ওয়াইডার’।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ১৩:৩৮
Share:

চরমতম দারিদ্রের অপেক্ষায় বিশ্বের ১১২ কোটি মানুষ। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গরিব যে শুধুই আরও গরিব হয়ে পড়বেন, তা নয়; করোনা সংক্রমণ আর লকডাউনের জেরে আরও প্রায় ৪০ কোটি মানুষ চরমতম দারিদ্রের শিকার হবেন গোটা বিশ্বে। শুধু ভারতেই দারিদ্রের চরম সীমায় পৌঁছবেন আরও ৬ কোটি মানুষ। যাঁদের আয় হবে দিনে ১৪৪ টাকা।

Advertisement

একটি আন্তর্জাতিক দলের গবেষণা এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি শুক্রবার প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে থাকা ‘ইউএনইউ-ওয়াইডার’। গবেষকদলে রয়েছেন লন্ডনের কিংস কলেজ ও অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদরা। গত বছর ভারতে চরমতম দারিদ্র সীমার নীচে ছিলেন ৪ কোটি মানুষ।

গবেষণা জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণ আর তা ঠেকাতে লকডাউনের জেরে বিশ্ব অর্থনীতির যা অবস্থা তাতে এটাই হতে চলেছে আগামী দিনে বিশ্বের দারিদ্র-চিত্র। করোনা পরিস্থিতির জন্যই আরও প্রায় ৪০ কোটি মানুষকে সহ্য করতে হবে চরমতম দারিদ্র্যের জ্বালা, যন্ত্রণা। যা বিশ্বব্যাঙ্কের দেওয়া আগের পরিসংখ্যানকেও ছাপিয়ে গেল। যেখানে বলা হয়েছিল, বিশ্বে চরমতম দারিদ্রের শিকার হবেন ৭ থেকে ১০ কোটি মানুষ।

Advertisement

চরমতম থেকে খুব দারিদ্র, বিভিন্ন ধরনের দারিদ্র্য-সীমা নির্ধারণের জন্য মানুষের গড় দৈনিক আয়ের যে মাত্রাগুলি বিশ্বব্যাঙ্ক নির্ধারণ করেছে, সেই সবক’টির ভিত্তিতেই এই গবেষণা চালানো হয়েছে।

আরও পড়ুন- ২৪ ঘণ্টায় ১০৯৫৬, মোট আক্রান্তে ব্রিটেনকে টপকে বিশ্বে চতুর্থ ভারত​

আরও পড়ুন- বাড়ছে বেকারত্ব, আমেরিকায় নতুন ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে ভারতীয়দের

গরিবদের আর্থিক অবস্থা বোঝানোর জন্য বিশ্বব্যাঙ্ক যে কয়েকটি মাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার একটি হল, মানুষের আয় দিনে ১৪৪ টাকা ২৪ পয়সা (বা, ১.৯০ ডলার) বা তারও কম। বিশ্বব্যাঙ্কের দেওয়া সংজ্ঞায় এই আয়ের মানুষদেরই বলা হয়, চরমতম দারিদ্রের শিকার। অন্যটি, যে সব মানুষের আয় দিনে ৪১৭ টাকা ৪১ পয়সা (৫.৫০ ডলার)। এঁদের বলা হয়, বেশি দরিদ্র।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এই চরমতম দারিদ্রের মাত্রায় আগামী দিনে বিশ্বে দারিদ্রের চরম সীমায় পৌঁছে যাবেন বিশ্বের অন্তত ১১২ কোটি মানুষ। আর বেশি দরিদ্রের মাত্রায় এই বাসযোগ্য গ্রহে গরিব হয়ে পড়বেন কম করে ৩৭০ কোটি মানুষ। যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি।

গবেষণা এও জানিয়েছে, পরিস্থিতির সর্বাধিক অবনতিতে কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় মানুষের গড় বাৎসরিক আয় কমে যাবে কম করে ২০ শতাংশ।

গবেষকদলের অন্যতম সদস্য অ্যান্ডি সামনার বলেছেন, “বিভিন্ন দেশের সরকারগুলি যদি জরুরি ভিত্তিতে এই সব মানুষের কল্যাণে আরও কিছু পদক্ষেপ না করে, লকডাউনের ফলে প্রতি দিন গরিবদের আয় যে ভাবে মার খাচ্ছে, তা পূরণ করার লক্ষ্যে কোনও সদর্থক ব্যবস্থা নিতে না পারে, তা হলে গোটা বিশ্বেই গরিবদের ভবিষ্যত বলে আর কিছুই থাকবে না।’’

গবেষকরা দেখিয়েছেন, এই চরমতম দারিদ্রেও ‘বৈষম্য’ থাকবে, এলাকাভেদে। কোথাও সেটা সংখ্যায় কম হবে। কোথাও বেশি। সবচেয়ে করুণ অবস্থা হবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির। তার মধ্যে প্রথম দিকেই রয়েছে জনসংখ্যাবহুল দেশ ভারতের নাম। তার পরেই রয়েছে সহরা মরুভূমি সংলগ্ন আফ্রিকার দেশগুলি। গোটা বিশ্বে যে ১১২ কোটি মানুষ চরমতম দারিদ্রের শিকার হবেন, তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই আফ্রিকার ওই দেশগুলির নাগরিক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement