লকডাউনের কবলে সাংহাই। ছবি: এএফপি
প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের ‘কোভিড জিরো’ নীতির ব্যর্থতা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। গোটা বিশ্ব যখন করোনার দুঃস্বপ্ন ভুলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে, তখন বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাই-সহ চিনের একাধিক শহর লকডাউনের কবলে। এই পরিস্থিতিতে সে দেশের আর্থিক অগ্রগতি গুরুতর ভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে অনুমান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের।
নোমুরা ব্যাঙ্ক এবং আমেরিকার একটি সংবাদসংস্থার যৌথ সমীক্ষা বলছে, এই মুহূর্তে চিনের ৪৪টি শহরে সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউন চলছে। সংক্রমণের হার কমারও কোনও ইঙ্গিত নেই। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সে দেশে ‘জাতীয় সঙ্কট’ তৈরি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ওই সমীক্ষায়। ঘরোরা সমস্যা থেকে দেশবাসীর নজর ঘোরানোর উদ্দেশ্যেই তাইওয়ান ঘিরে চিনা ফৌজের সাম্প্রতিক তৎপরতা বলে মনে করছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
চিনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ে প্রায় তিন কোটি মানুষের বসবাস। সেখানে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ২৮ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। ফলে বাসিন্দারা গৃহবন্দি। বাসিন্দাদের উপর নজরদারির জন্য ড্রোন ক্যামরাও ব্যবহার করছে পুলিশ, প্রশাসন। কিন্তু খাদ্য, পানীয় জল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। অনাহারে রয়েছেন প্রচুর মানুষ। যদিও একদলীয় চিনের কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত সরকারের দাবি, বাসিন্দাদের সমস্যা প্রায় মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।
যদিও কোভিডে আক্রান্তদের নিভৃতবাসের জন্য সে শহরে পর্যাপ্ত জায়গারও অভাব দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রবিবার শহরবাসীদের ঘর চেয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এক নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, কোভিড রোগীদের নিভৃতবাসের জন্য ঘর ছাড়তে হবে বাসিন্দাদের। এই নির্দেশিকা পাওয়ার পর ফের ক্ষোভ ছড়িয়েছে সাংহাইয়ে।
যদিও সাংহাই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘরবন্দি অবস্থাতেই বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বলে বেশ কয়েকটি আম্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে। সেই বিক্ষোভের ভিডিয়ো ফুটেজও নেটমাধ্যমে দেখা গিয়েছে। সাংহাইয়ের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কড়া লকডাউন তুলে দিয়ে টিকাকরণে জোর দিক সরকার। চিনফিং সরকার সে দেশে তৈরি যে টিকা বহুল পরিমাণে ব্যবহার করছে, তার ক্ষমতা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত অন্যান্য টিকার চেয়ে কম বলে সম্প্রতি আমেরিকার একটি গবেষণা সংস্থা দাবি করেছে। পাশাপাশি, টিকার বণ্টনের ক্ষেত্রেও অসাম্য থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সামনে এসেছে।