প্রতীকী ছবি।
গ্লাসগোয় সাধারণত বৃষ্টি বেশি হয়। আশার কথা, কয়েক দিন ধরে এখানে বেশ রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া। আমার ছেলেটা বাড়ির পিছন দিকের বাগানে খেলতে পারছে। ওর বয়স প্রায় তিন। ঘরের মধ্যে আর কতদিন-ই বা ভাল লাগে!
গ্লাসগো এখন সম্পূর্ণ লকডাউনে। দু’সপ্তাহের বেশি হয়ে গেল। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। অবস্থা স্থিতিশীল হলেও আইসিইউতে-ই রাখা হয়েছে তাঁকে।
এক মাস আগেও কিন্তু পরিস্থিতি এতটা খারাপ ছিল না। আমার অফিসের নিয়ম, সপ্তাহে দু-তিন দিন আমাকে ঘুরে ঘুরে কাজ করতে হবে। আস্তে আস্তে যখন গোটা দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে লাগল, তখন সরকার থেকে বলে দেওয়া হল, খুব প্রয়োজন না পড়লে বাইরে বেরোনোর দরকার নেই। কয়েক দিন পরে অফিস জানিয়ে দিল, ‘ওয়র্ক ফ্রম হোম’ করতে হবে। সেই থেকে বাড়িতেই রয়েছি। ওয়র্ক ফ্রম হোম করছে স্ত্রী-ও। ও এখানকার ‘ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস’-এ কাজ করে। এই পরিস্থিতিতে ওদের সংস্থা যে রকম লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে ওদের প্রশংসায় ব্রিটেনবাসী।
গত এক মাসের মধ্যে একে একে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, পানশালা, শপিং মল। প্রথম কয়েক সপ্তাহ অসুবিধায় পড়লেও প্রয়োজনীয় সামগ্ৰী পেতে এখন কিন্তু খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। সরকার নিয়ম করে দিয়েছে, এক জন ব্যক্তি যে কোনও জিনিস মাত্র দু’টি করে কিনতে পারবেন। এখানকার প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে অনেকেই বয়স্ক। তাঁদের কী কী দরকার, তা ফোনে জেনে নিয়ে বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আসছি আমাদের মধ্যে কয়েক জন।
তবে সরকারের তরফে বলে দেওয়া হয়েছে, বাড়ির সামনে অল্প হাঁটাহাঁটি, জগিং বা সাইক্লিং করা যেতে পারে। গত কয়েক দিন ধরে রোজ বিকেলে ক্লাইড নদীর ধারে ছেলেকে নিয়ে হাঁটতে যাচ্ছি আমরা দু’জন। ক্লাইড নদী বাড়ি থেকে মিনিট দুয়েকের পথ। ওই সফরটুকুই আমাদের অক্সিজেন। পরিস্থিতি দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে, এই আশায় আছি।
(লেখক বিমা সংস্থায় কর্মরত)
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)