ফাঁকা সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় ইস্টারের প্রার্থনা পোপ ফ্রান্সিসের। ছবি: এপি
ইস্টারের সপ্তাহটা শোকের আবহেই কাটল ইটালির। প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্পে কন্টি বলেছেন, ‘‘বন্ধুদের আলিঙ্গন, আত্মীয়দের হাসি, গির্জায় করমর্দন— দেশের সব ঐতিহ্য আমরা মিস করছি। সবার ত্যাগ থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, আমাদের দেশ খুব শীঘ্র সুস্থ হয়ে উঠবে।’’ ইটালিতে এখন মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজারের বেশি।
আজ ইস্টার-প্রার্থনায় পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, ‘‘গোটা বিশ্ব এখন কষ্ট পাচ্ছে। এটা উদাসীনতার সময় নয়। অতিমারির মোকাবিলা করতে সবাইকে একজোট হতে হবে।’’ ভ্যাটিকান থেকে লাইভস্ট্রিমে এসেছে পোপের বক্তব্য। সেই ভিডিয়োয় ধরা পড়েছে ফাঁকা সেন্ট পিটার্স
স্কোয়ারের ছবি।
করোনাভাইরাসে মৃত এবং আক্রান্তের সংখ্যায় আমেরিকা আগেই টেক্কা দিয়ে ফেলেছে ইটালিকে। এ বার গোটা ইউরোপে চিন্তা বাড়াচ্ছে ব্রিটেনও। সে দেশের সরকারের পরামর্শদাতা এবং ওয়েলকাম ট্রাস্টের ডিরেক্টর জেরেমি ফারার আজ বলেছেন, ‘‘ইউরোপে ‘সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত’ না হলেও ব্রিটেন হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত তালিকার অন্যতম দেশ হয়ে উঠবে।
ফারারের কথায়, ‘‘ব্রিটেনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তবে আমার এখনও আশা, আগামী এক সপ্তাহে নতুন করে সংক্রমণ কমতে শুরু করবে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হারও কমবে। সংক্রমণের রেখাচিত্র ক্রমশ সরল হবে।’’ যদিও ব্রিটেনে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে আজই। আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে।
আমেরিকায় নিউ ইয়র্ক ছাড়াও বেশ খারাপ অবস্থা নিউ জার্সির। সেখানকার গভর্নর ফিল মারফি জানিয়েছেন, শহরে করোনা সংক্রমণ শীর্ষ ছুঁতে সপ্তাহের অপেক্ষা। তিনি নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোর সঙ্গে মিলিত ভাবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল ঠিক করছেন। নিউ ইয়র্কে আগামিকাল থেকে বর্ণভিত্তিক, আয়ভিত্তিক, অভিবাসীভিত্তিক করোনা-পরীক্ষা শুরু
হচ্ছে। অতিমারি-বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফসি বলেছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন আরও আগে সক্রিয় হলে অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত। তবে আপাতত এই সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে ভেন্টিলেটরের অভাব হবে না বলেই দাবি মেয়র ডি ব্লাসিয়োর। গত ২৪ ঘণ্টায় নিউ ইয়র্কে মারা গিয়েছেন ৭৫৮ জন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার কমেছে এখানে।
স্পেনে মানুষের চলাফেরায় খুব কড়া যে সব বিধিনিষেধ ছিল, সেগুলোর রাশ ধীরে ধীরে আলগা করা হচ্ছে। যাঁদের পক্ষে বাড়ি থেকে কাজ করা একেবারেই অসম্ভব এবং যাঁদের অফিস খুলছে, তাঁরা ইস্টারের ছুটির শেষে কাজে ফিরতে পারেন। তবে এগুলি জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। রেস্তরাঁ, বার, বিনোদনের অন্য সব ক্ষেত্র বন্ধই থাকবে। খুব কম সংখ্যক ব্যাঙ্ক খুলবে। মেট্রো স্টেশন-সহ বিভিন্ন পরিবহণ ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে ১ কোটি মাস্ক বিতরণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সাঞ্চেজ বলেছেন, ‘‘এখনও জানি না, আমরা কোন স্বাভাবিকতার দিকে এগোচ্ছি। যে ভাবে আমরা করোনা-প্রকোপের শীর্ষ ছুঁয়েছি, সেখান থেকে নেমে আসাটাও খুব সহজ হবে না।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)