ঠিক এক সপ্তাহ আগের কথা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ওয়েবসাইটে কিছু ক্ষণের জন্য ভেসে ওঠা একটা রিপোর্ট ঘিরে বিতর্ক বেধেছিল। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, করোনা-নিরাময়ে চিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ব্যবহৃত ওষুধ ‘রেমডেসিভিয়ার’ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই অবশ্য তা মানতে চাননি। বিতর্ক নতুন করে উস্কে দিয়ে গত কাল এক মার্কিন বিজ্ঞানী দাবি করলেন, অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি কাজ দিচ্ছে করোনা-চিকিৎসায়।
লাখো মানুষের মৃত্যুই শুধু চিন্তা নয়, প্রতিষেধকের অভাবে ধুঁকছে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। গত এক দশকে এত খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থা হয়নি আমেরিকার, বলছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। জার্মানিও জানিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম এমন আর্থিক সঙ্কটে তারা। এই অবস্থায় ওই মার্কিন বিজ্ঞানীর দাবি আশার আলো দেখাচ্ছে।
চিনে প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হলেও রেমডেসিভিয়ার তৈরির পিছনে রয়েছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গিলিড। তাই চিনের পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলে আমেরিকাতেও। শীর্ষ স্থানীয় মার্কিন এপিডেমিয়োলজিস্ট অ্যান্টনি ফসি দাবি করেছেন, যে করোনা-রোগীকে রেমডেসিভিয়ার দেওয়া হয়েছে, সে অন্যদের থেকে ৩০ শতাংশ দ্রুত সুস্থ হয়েছে। ফসির কথায়, ‘‘রেমডেসিভিয়ার ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে, ওষুধটির স্পষ্ট, গুরুত্বপূর্ণ এবং সদর্থক প্রভাব রয়েছে, যা দ্রুত রোগীকে সুস্থ করে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, রেমডেসিভিয়ারের মার্কিন ট্রায়ালে আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার ১০৬৩ জন রোগীর দেহে প্রয়োগ করা হয়েছিল ওষুধটি। চিনে তুলনায় সামান্য সংখ্যক রোগীকে ওষুধটি দেওয়া হয়েছিল। মার্কিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত থাকা গবেষকদলে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতও ছিলেন। অরুণা সুব্রহ্মণ্যম নামে মেডিসিনের ওই অধ্যাপকও বলেছেন, ‘‘দশ দিনের সাধারণ চিকিৎসায় যা ফল মিলছে, পাঁচ দিনেই সেই কাজ করে দেখাচ্ছে রেমডেসিভিয়ার।’’
হু-র এক শীর্ষকর্তা মাইকেল রায়ান অবশ্য আমেরিকার ট্রায়াল নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। গত কাল তিনি জানিয়েছেন, রেমডেসিভিয়ার সংক্রান্ত মার্কিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্টটি তিনি এখনও পর্যালোচনা করে দেখেননি।
এ দিকে, করোনা-প্রতিষেধকের খোঁজে অক্সফোর্ডে চলা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত ‘সেরাম ইন্সস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া’ জানাল, সম্ভাব্য ভ্যাকসিন (চ্যাডক্স১)-টির অন্তত ছ’কোটি ডোজ় এ বছর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। শুধুমাত্র চ্যাডক্স১-এর কার্যকারিতা প্রমাণ হওয়ার অপেক্ষা। প্রতিষেধক উৎপাদনে বিশ্বে সর্ববৃহৎ সংস্থা সেরাম।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)