ছবি এপি
করোনা মোকাবিলায় তৈরি মার্কিন প্রশাসনের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের শীর্ষে রয়েছেন তিনি। দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রোজকার সাংবাদিক বৈঠকে এত দিন তাঁকেই বলতে শোনা গিয়েছে। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের সেই উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফসি এ বার নিভৃতবাসে যাওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। নিভৃতবাসে যাচ্ছেন টাস্ক ফোর্সের আরও দুই সদস্য। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিষয়ক দফতরের ডিরেক্টর রবার্ট রেডফিল্ড এবং খাদ্য ও ওষুধ সংক্রান্ত দফতরের কমিশনার স্টিফেন হান। শনিবার হোয়াইট হাউসের তরফে এই কথা জানানো হয়েছে।
আমেরিকায় সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা রোজ বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১,৫৬৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মোট মৃতের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে পরপর তিন জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলে। সেই তালিকায় ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের মুখপাত্র কেটি মিলার। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় প্রশাসনের অন্দরে। শনিবার ফসির তরফে জানানো হয়, সম্প্রতি সংক্রমিতদের সরাসরি সংস্পর্শে তিনি আসেননি। তাই ‘বিশেষ কোয়রান্টাইনে’ যাচ্ছেন তিনি। আগামী দু’সপ্তাহ মাস্ক পরে ও বাড়িতে থেকে কাজ করবেন ফসি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো রোজ ফসিরও নিয়মিত করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এক সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসায় রেডফিল্ড ও হান দু’সপ্তাহের জন্য নিভৃতবাসে যাচ্ছেন। তবে কে সেই ব্যক্তি, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে হোয়াইট হাউস।
আরও পড়ুন: এ বার করোনা পৌঁছল হোয়াইট হাউসেও, ‘চিন্তিত নই’, বললেন ট্রাম্প
সরকার, স্বাস্থ্য দফতর এবং রাজনৈতিক মহল মধ্যে সমন্বয় গড়তে করোনা টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। প্রতিদিন নিয়ম করে সাংবাদিক বৈঠক করতেন তাঁরা। যদিও গত সপ্তাহে এই প্রকাশ্য বৈঠক আচমকা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাম্প সরকার। তাঁরা আড়ালে থেকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উপরে নজর রাখবেন বলে ঠিক হয়। আগামী মঙ্গলবার সেনেটে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত শুনানি রয়েছে। রেডফিল্ড ও হান তাতে বাড়ি থেকে টেলি-কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এবং ফসি মাস্ক পরেই ওই শুনানিতে হাজিরা দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশে করোনা-পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনায় মুখ খুলেছেন অনেকেই। সেই তালিকায় এ বার নাম জুড়ল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার। তাঁর জমানার কিছু প্রশাসনিক আধিকারিকের সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে কথা বলছিলেন ওবামা। শুক্রবার রাতে সেই কথোপকথনের কিছু অংশ ফাঁস হয়ে যায়। তাতে ওবামাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমরা স্বার্থপরের মতো, আদিম উপজাতিদের মতো, বিচ্ছিন্ন হয়ে, একে অপরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব নিয়ে লড়াই করছি। আমেরিকার মানুষের মধ্যে এখন এই প্রবণতা তৈরি হয়েছে। পৃথিবী-জোড়া এই সঙ্কটের মুহূর্তে তাই আমেরিকার ভূমিকা দুর্বল হয়ে পড়ছে।’’ ট্রাম্পের আমলে দেশের বিচার ব্যবস্থার উপরেও আস্থা হারানোর আশঙ্কা করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: করোনা হুঁশিয়ারি এখনই দেবেন না, হু-র কাছে তদ্বির করেছিল চিন!