Coronavirus

‘জীবাণুনাশকের ইঞ্জেকশন আর সূর্যালোক’, করোনাবধে নতুন প্রেসক্রিপশন ট্রাম্পের

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সূর্যালোকের উপর ভরসা রাখার কথা আগেও বলেছেন ট্রাম্প।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ১১:৫৫
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি-পিটিআই।

কোভিড-১৯ ভাইরাসকে বধ করার কয়েকটি হাস্যকর উপায় বাতলালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বললেন, সূর্যালোক, অতিবেগুনি রশ্মি ও ঘর‌োয়া ভাবে ব্যবহৃত জীবাণুনাশক শরীরে ঢুকিয়েও হয়তো করোনাভাইরাসকে বধ করা যেতে পারে। এই উপায়গুলি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।

Advertisement

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘দেখতে হবে, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে কোনও জীবাণুনাশকে যে ভাবে শরীরে ঢোকানো হয়, আর তা এক মিনিটের মধ্যেই জীবাণু মারতে পারে, সেই ভাবেই কি কোনও কিছু শরীরে ঢুকিয়ে মারা যেতে পারে কোভিড-১৯-কে?’’

ট্রাম্পের মন্তব্যের আগেই হোয়াইট হাউসের হোমল্যান্ড সিকিওরিটি দফতরের সচিবের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা উইলিয়াম ব্রায়ান বলেন, ‘‘মার্কিন প্রশাসনের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, কোভিড-১৯ ভাইরাস বধ করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে পারে অতিবেগুনি রশ্মি। পারে ব্লিচ ও অ্যালকোহলের মতো জীবাণুনাশকও। আর ভাইরাস মাটিতে থাকলে সেটা ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই করা সম্ভব। এটাই এখনকার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ। পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, মাটিতে বা বায়ুতে ভেসে থাকা, দু’টি অবস্থাতেই এই ভাইরাসকে বধ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে সূর্যালোক। তাই আশা করা যায়, আসন্ন গ্রীষ্মে এর সংক্রমণ কমে আসবে।’’ সূর্যালোকে প্রচুর পরিমাণে থাকে অতিবেগুনি রশ্মি।

Advertisement

ব্রায়ানের কথায় উৎসাহিত হয়ে এর পরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘‘ধরুন, অতিবেগুনি রশ্মি বা অত্যন্ত শক্তিশালী কোনও আলো আমাদের শরীরে পড়ল। তাতেই এটা হতে পারে। তখন অবশ্য আপনারা বলবেন, পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখতে হবে। সেই আলো যদি চামড়া ফুঁড়ে বা অন্য কোনও ভাবে আমাদের শরীরে ঢোকে, তা হলেও এই কাজটা সম্ভব হবে।’’ কথাটা বলেই বার বার ব্রায়ানের দিকে তাকান ট্রাম্প। এর পরেই তিনি আসেন জীবাণুনাশক দিয়ে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গে। ট্রাম্পের মন্তব্যে ইঙ্গিত মেলে, তিনি যেন চাইছেন এই সব নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হোক।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট এও বলেন, ‘‘এই ভাইরাস যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পৌঁছয় ফুসফুসে, তাই এই সব উপায়ে তাদের বধ করা যায় কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।’’

আরও পড়ুন: রিপোর্টের ক্ষেত্রে আশা করি কেন্দ্রীয় দল নিরপেক্ষ হবে: মুখ্যসচিব

আরও পড়ুন: কিট দেওয়ার নাম নেই, বদনামের চক্রান্ত: মমতা

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, অতিবেগুনি রশ্মির ল্যাম্পের সামনে বেশি ক্ষণ থাকলে যে আমাদের ক্ষতি হয়, গবেষণা তা আগেই দেখিয়েছে। এও দেখিয়েছে, শরীরের ভিতরে ওই রশ্মির ক্ষতিকারক ভূমিকা তুলনায় কম। আর জীবাণুনাশক শরীরে ঢুকলে বদহজমের সমস্যা হয়। তা শুধু জীবাণুই নয়, মানুষও মারতে পারে।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উপায় হিসাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য বেশ কিছু দিন ধরেই সূর্যালোক, বেশি তাপমাত্রা আর ম্যালেরিয়া-সহ নানা ধরনের ওষুধের উপর ভরসা রাখার কথা বলে আসছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন হোয়াইট হাউসে এই সব উপায় বাতলাচ্ছেন, সেই সময় সেখানে ছিলেন হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের কো-অর্ডিনেটর ডেবোরা ব্রিস্ক। প্রেসিডেন্টের এই সব কথা শুনে তিনি যে অবাক হয়ে গিয়েছেন, তার ভিডিয়ো পরে সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।

হোয়াইট হাউসে তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা উইলিয়াম ব্রায়ান কয়েকটি স্লাইডও দেখান। জানান, স্লাইডগুলি বানানো হয়েছে মেরিল্যান্ডের ‘ন্যাশনাল বায়োডিফেন্স অ্যানালিসিস অ্যান্ড কাউন্টারমেজার্স সেন্টার’-এর সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণের সারাংশগুলি নিয়ে। স্লাইডে দেখানো হয়, তাপমাত্রা ২১ থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে কোভিড-১৯-এর অর্ধায়ু (যে সময় ভাইরাসের সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যায়) হয় ১৮ ঘণ্টা। সে ক্ষেত্রে আর্দ্রতার পরিমাণ থাকতে হবে ২০ শতাংশ। আর যে তলের উপর সেই ভাইরাস রয়েছে, তার কোনও ছিদ্র থাকলে চলবে না। যেমন, দরজার হ্যান্ডল বা ‘স্টেনলেস স্টিল’। আর আর্দ্রতা বেড়ে ৮০ শতাংশ হয়ে গেলেই সেই অর্ধায়ু কমে হয় ৬ ঘণ্টা।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement