প্রতীকী ছবি
সংক্রমণ বাড়ছিলই। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১১,৬৫৬ জনের শরীরে করোনার অস্তিত্ব মিলল রাশিয়ায়। যার জেরে সংক্রমণের নিরিখে সোমবারই ইটালি ও ফ্রান্সকে ছাপিয়ে তালিকায় চতুর্থ স্থান নিল ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ— আমেরিকা, স্পেন ও ব্রিটেনের ঠিক পরেই।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আজই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কথা প্রেসিডেন্ট পুতিনের। ১ জুন থেকে কী ভাবে দেশের অর্থনীতি সচল করা যায়, তা নিয়ে আগেই সরকারকে ভাবতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আদৌ লকডাউন শিথিল করা উচিত হবে কি না, প্রশ্ন উঠছেই। সরকারি সূত্রের খবর, গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি রাজধানী মস্কো শহরের। এক দিনে শুধু এখানেই সংক্রমিতের সংখ্যা ৬ হাজারের বেশি। গোটা দেশে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৬৮ হাজারের অর্ধেকই মস্কোর। এ দিকে, রবিবার সরকারের দেওয়া তথ্যই বলছে, গত বছর এপ্রিলের তুলনায় এ বছরের এপ্রিলে অন্তত ১৮ শতাংশ মানুষ বেশি মারা গিয়েছেন রাশিয়ায়। তাই চিন, ব্রিটেনের মতো এখানেও সরকারি ভাবে করোনা-মৃত্যু কম দেখানোর অভিযোগ উঠছে।
বিশ্বে করোনা
মৃত
২,৮৬,২২৬
আক্রান্ত
৪২,৩৮,৮২২
সুস্থ
১৫,২০,১৯৯
পুতিনের প্রশাসন যদিও দেশে করোনা মৃত্যুর হার সার্বিক ভাবেই কম বলে দাবি করছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পিছনেও তাদের যুক্তি— আগের থেকে এখন অনেক বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। দেশ জুড়ে এখনও পর্যন্ত ৫৬ লক্ষেরও বেশি নাগরিকের পরীক্ষা হয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। যদিও প্রতি দশ লক্ষ নাগরিক পিছু করোনা-পরীক্ষায় এখনও স্পেন, ইটালি কিংবা জার্মানির থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রাশিয়া। ইটালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা গত সাত সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম।
আরও পড়ুন: সপ্তমের থাবা সর্বাঙ্গে! ‘সংক্রমিত হবেন ৭০%’
প্রায় দু’মাস লকডাউনে থাকার পরে আজ থেকে একটু একটু করে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে শুরু করেছে ফ্রান্স। কিন্তু লকডাউন তোলার পরে চিন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জার্মানিতে যে-হেতু দ্বিতীয় দফা করোনা-ঝড়ের ইঙ্গিত মিলেছে, তাই পারস্পরিক দূরত্ববিধি না-মানলে আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে প্যারিস। ধাপে-ধাপে লকডাউন তোলা নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পরিকল্পনা নিয়েও আজ বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। এ দিকে, বেশ কয়েকটি প্রদেশে ইতিমধ্যেই লকডাউন শিথিল হয়েছে আমেরিকায়। এক লক্ষ মানুষের মৃত্যু হবে ধরে নিয়েই অর্থনীতি সচল রাখার পক্ষে সওয়াল করে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু যে ভাবে হোয়াইট হাউসের অন্দরেই সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে, তাতে জনজীবন ‘স্বাভাবিক’ হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তা সে প্রশাসনের হাতে যতই ‘রেকর্ড’ পরিমাণ ভেন্টিলেটর থাকুক। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি সংস্থার সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, অগস্টের গোড়াতেই আমেরিকায় করোনা-মৃত্যু ১ লক্ষ ৩৪ হাজারের গণ্ডি ছাড়াবে!
এ দিকে, করোনা ফের চোখ রাঙাচ্ছে চিনের উহানেও। এক মাস পরে গত কালই সেখানে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এ জন্য প্রশাসনিক গাফলতিকেই কাঠগড়ায় তুলে আজ আঞ্চলিক প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তাকে বরখাস্ত করেছে বেজিং।
আরও পড়ুন: লকডাউন ওঠার এক মাস পর ফের উহানে সংক্রমণ, আক্রান্ত একই আবাসনের ৫ জন