হোটেলে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে রোবট (বাঁ দিকে), হাসপাতালে কাজে ব্য়স্ত রোবট (ডান দিকে)। ছবি: টুইটার।
করোনা আতঙ্কে হোটেলবন্দি মানুষ। হোটেলের ঘর থেকে বাইরে বেরোতেও পারছেন না। এই অবস্থায় তাঁদের দরজায় দরজায় খাবার পৌঁছে দিচ্ছে রোবট। সংক্রমণ এড়াতে এভাবেই প্রযুক্তির সাহায্য নিল চিন। হোটেলের প্রতি রুমে ঘুরে ঘুরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ওই ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
রোবটটির নাম লিটল পিনাট। ভিডিয়োটি চিনের হনঝাউয়ের একটি হোটেলের। তাতে দেখা যাচ্ছে, রোবটটি স্তরে স্তরে সাজানো খাবার নিয়ে ওই হোটেলের প্রতিটা রুমের সামনে পৌঁছে যাচ্ছে। তারপর জোরে ঘোষণা করছে, ‘‘হ্যালো। মিষ্টি লিটল পিনাট আপনার খাবার নিয়ে পৌঁছে গিয়েছে, তা সংগ্রহ করে নিন। সংগ্রহ করা হয়ে গেলে ফিনিশ বোতাম টিপে দিন।’’ খাবার সংগ্রহের পর ফিনিশ বোতামে চাপ দেওয়া মাত্রই আবার রোবট বলে উঠছে, ‘‘খাবার উপভোগ করুন, আর কিছু প্রয়োজনে ইউচ্যাটে হোটেলের স্টাফকে জানান।’’ হোটেলের একটা রুমে খাবার পৌঁছে দেওয়ার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ায় পর রোবট রওনা দিচ্ছে অন্য রুমের জন্য।
ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিয়োটি অবশ্য জানুয়ারি মাসের। ২৭ এবং ২৮ জানুয়ারি, এই দু’দিন হনঝাউয়ে পৌঁছনো একটি বিমানের ৩৩৫ যাত্রীকে ওই হোটেলেই নজরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। কারণ ৩৩৫ যাত্রী নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে হনঝাউয়ে পৌঁছনো ওই বিমানের দু’জন যাত্রীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তার পর বিমানের সমস্ত যাত্রীদের দু’দিনের জন্য আলাদা করে পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়েছিল হোটেলে।
এই প্রথম অবশ্য নয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে অনেক আগে থেকেই এরকম প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে চিন। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছে রোবট। গুয়াংঝৌয়ের একটি বাজার এলাকায় আবার এরকম যন্ত্রমানবও নিয়োগ করা হয়েছে। কেউ মাস্ক পরে না-হাঁটলেই, বকুনি দিচ্ছে রোবট। এছাড়াও কিছু চিনা প্রযুক্তি সংস্থা এক বিশেষ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছেন। এতে ব্যবহারকারীরা জানতে পারবেন, তাঁরা যে বিমানে উঠেছেন, বা ট্রেনে চেপেছেন, তাতে কোনও ভাইরাস আক্রান্ত রোগী সফর করেছেন কি না।
আরও পড়ুন: কেজরীবালের প্রশংসা করে দলের রোষে কংগ্রেস নেতা
এত কিছু করেও চিনে করোনাভাইরাসের আক্রমণ এখনও রোখা যায়নি। রোজই লাফিয়ে বাড়ছে মৃত এবং আক্রান্তের সংখ্যা। সব মিলিয়ে সে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছুঁল ১৬৬৫। আক্রান্ত ৬৮ হাজার। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ন’হাজার জন। চিনের বাইরে অন্তত ৩০টি দেশে ৫০০ জন এই ভাইরাসের কবলে পড়েছেন। তার মধ্যে ফ্রান্স, হংকং, ফিলিপিন্স ও জাপানে মৃত্যু হয়েছে চার জনের।