মাস্ক পরা আর বাধ্যতামূলক নয় বেজিংয়ে। ছবি: রয়টার্স।
নোভেল করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। তার মধ্যেই অতিমারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করতে শুরু করেছিল চিন। এ বার মাস্ক পরাও আর বাধ্যতামূলক রইল না দেশের রাজধানীতে। বরং এ বার থেকে চাইলে মাস্ক না পরেই বাড়ির বাইরে বেরতে পারবেন সে দেশের নাগরিকরা। শুক্রবার বেজিংয়ে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এমনটাই জানিয়ে দেওয়া হল।
গত ১৩ দিনে বেজিংয়ে নতুন করে কোনও ব্যক্তি কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হননি। চিনা মেইনল্যান্ডে গত পাঁচ দিনে নতুন করে সংক্রমিত হননি কোনও নাগরিক। তাতেই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সরকার বিধিনিষেধ তুলে নিলেও, এখনই মাস্ক না পরে বেরতে সাহস পাচ্ছেন না সেখানকার নাগরিকরা। যে কারণে সরকারি ঘোষণার পরও শুক্রবার বেজিংয়ের রাস্তায় বেশির ভাগ মানুষের মুখেই মাস্ক দেখা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মহিলা বলেন, ‘‘এখনই মাস্ক খুলে ফেলতে পারি আমি। কিন্তু বাকিরা সেটা মেনে নেবেন কি না, সেটা আগে জানা প্রয়োজন। আমাকে মাস্ক না পরতে দেখে বাকিদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হতে পারে।’’ সবে পরিস্থিতি শুধরেছে, তাই এত তাড়াতাড়ি মাস্ক খুলে ফেলা হবে কি না, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে বলে জানান ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: প্রণবের রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন স্থিতিশীল, এখনও ভেন্টিলেশনেই
গত বছরের শেষ দিকে চিনের উহানেই প্রথম নোভেল করোনা থাবা বসায়। তার পর থেকে দু’দফায় একটানা লকডাউন চলেছে সেখানে। তবে গত কয়েক মাসে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলতে সক্ষম হয় তারা। সেই কারণেই ধীরে ধীরে বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করে সেখানে।
এর আগে, এপ্রিলেও এক বার মাস্ক নিয়ে কড়াকড়ি শিথিল করেছিল বেজিং। কিন্তু বেজিংয়ের দক্ষিণ অংশে একটি পাইকারি বাজারে পর পর বেশ কয়েক জন সংক্রমিত হয়ে পড়লে, জুন মাসে ফের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হয় সেখানে। তার পর গত কয়েক দিনে জনজীবন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে সেখানে। এর পরই দ্বিতীয় বারের জন্য মাস্ক না পরলেও চলবে বলে জানিয়ে দিল তারা।
আরও পড়ুন: কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কলকাতার সহকারী পুলিশ কমিশনারের
সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে বিশ্ব তালিকায় ৩২তম স্থানে রয়েছে চিন। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৮৯ হাজার ৫৬৭ জন কনোভল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, লকডাউন নিয়ে কড়া অবস্থান, মাস্ক ও হেলথকেয়ার সামগ্রীর ব্যবহারে জোর দেওয়া, বাধ্যতামূলক কোয়রান্টিন এবং ব্যাপক হারে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা— এ সবের জেরেই চিন অতিমারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। তবে এখনও একেবারে নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় আসেনি বলে মত তাঁদের। কারণ ২০ অগস্ট বিদেশ ফেরত ২২ জনের শরীরে কোভিড ধরা পড়েছে দেশের মেনল্যান্ডে। তার জেরে বিদেশি নাগরিকদের জন্য সীমান্ত আপাতত বন্ধ রেখেছে চিন।