ছবি রয়টার্স।
গোড়াতেই দাবি উঠেছিল, নোভেল করোনাভাইরাস ‘বাতাসবাহিত’ হয়ে ছড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নির্দেশিকায় সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়। যদিও একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিকের রিপোর্টে ২৩৯ জন বিশেষজ্ঞ দাবি করলেন— ‘‘বদ্ধ জায়গার বাতাসে ছড়াচ্ছে ভাইরাসটি। সেখানে থাকা সুস্থ ব্যক্তিদের সংক্রমিত করছে।’’ ওই বিজ্ঞানীরা হু-র নির্দেশিকা পরিবর্তনেও জোর দিয়েছেন।
হু-র বক্তব্য ছিল, এই ভাইরাসটি বাতাস-বাহিত নয়। কিন্তু ওই দৈনিকের রিপোর্টে বিজ্ঞানীদের দাবি, শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জলকণাতেও ভাইরাসটি থাকতে পারে। এবং তা মারণ রোগ বয়ে নিয়ে যেতে পারে কোনও জায়গায় থাকা একাধিক ব্যক্তির শরীরে। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ‘‘বার, রেস্তরাঁ, অফিস, মার্কেট, ক্যাসিনো... পৃথিবীর সর্বত্র নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এবং নির্দিষ্ট করে এই ধরনের জায়গাগুলিতে এক সঙ্গে অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন। এ থেকেই বিজ্ঞানীদের এত দিন দাবি করে আসা কথাটা ক্রমশ আরও জোরদার হচ্ছে, বদ্ধ জায়গার বাতাসে ভাইরাস দ্রুত সংক্রমণ ঘটায়। কাছাকাছি থাকা লোকজনকে সংক্রমিত করে।’’ হু-র দাবি ছিল বড় জলকণা ছাড়া ভাইরাসটি বাঁচতে পারে না। ফলে তার পক্ষে বাতাসে ভাসা সম্ভব নয়। কিন্তু মার্কিন রিপোর্টটিতে দাবি করা হয়েছে, তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী শ্বাসপ্রশ্বাসে বেরিয়ে আসা ক্ষুদ্র জলকণাতেও ভাইরাস থাকছে। তাই বাতাসে ভাসা এর পক্ষে অসম্ভব নয়। আর এ ভাবেই কোনও বদ্ধ জায়গায় বাতাসবাহিত হয়ে ছড়াচ্ছে কোভিড-১৯।
ভারতের ‘কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিয়াল রিসার্চ’ (সিএসআইআর)-এর ডিজি শেখর মান্ডের দাবি, করোনাভাইরাসকে সার্বিক ভাবে ‘বাতাসবাহিত’ বলা যায় না। কিন্তু কয়েক ফুট পর্যন্ত দূরত্ব এটি বাতাসে ভেসে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘বায়ুবাহিত রোগ হল, যেখানে জীবাণু (ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া) হাওয়ায় ছড়ায়। যেমন চিকেনপক্স, হাম, ইনফ্লুয়েঞ্জা। এ ক্ষেত্রে আক্রান্তের শ্বাসপ্রশ্বাসে বেরনো ‘ড্রপলেটস’-এ ভাইরাস ছড়ায়। সেটি কিছু ক্ষণ বাতাসে ভাসতে পারে। কিন্তু হাওয়ায়-হাওয়ায় ছড়াতে পারে না।’’