International News

সবই বন্ধ, টান পড়ছে রসদে, এখনও উইকএন্ডে বিচ পার্টি করছেন অনেকে

হ্যান্ড স্যানিটাইজার, এন-৯৫ মাস্ক, গ্লাভস সবই বাজারে অমিল। বাড়িতেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানো হয়েছে।

Advertisement

মালিনী বসু চৌধুরী

ডেলাওয়্যার, আমেরিকা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৫৯
Share:

এমনই শুনশান আমেরিকার রাস্তা।

আমি জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক। স্বামীর কর্মসূত্রে প্রায় দেড় বছর ধরে ডেলাওয়্যারে আছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম স্টেট ডেলাওয়্যার, যা নিউ জার্সির পাশেই অবস্থিত। নিউইয়র্ক মাত্র দু’ঘন্টার পথ।

Advertisement

আপনারা সকলেই জানেন করোনাভাইরাস আক্রান্ত বিভীষিকাময় নিউইয়র্কের কথা। আমেরিকার ৫০টি রাজ্যেই কম-বেশী করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ডেলাওয়্যার রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৪, মৃত ৭।

আজ ১৮ দিন ধরে আমরা গৃহবন্দি। অথচ গত ১২ মার্চ পর্যন্তও আমরা চেনা ছন্দে জীবনযাপন করছিলাম। নিয়মিত বাইরে বেরোচ্ছিলাম। জনজীবন স্বাভাবিক ছিল। ভাবছিলাম ইউরোপেও শীঘ্রই করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

Advertisement

এ দেশে মানুষের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও টিস্যু-রোল কেনার বহর দেখে আমরা সবাই হাসাহাসি করছিলাম, মিমস শেয়ার করছিলাম। ১৩ই মার্চ ডেলাওয়্যারের গভর্নর হঠাৎ স্টেট এমার্জেন্সি ঘোষণা করলেন। একএক করে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, অফিস, শপিং মল, পাব, মুভি-থিয়েটার সব বন্ধ হল।

এ বার আমরা কিছুটা ভয় পেলাম। প্রথমেই ঠিক করলাম এখন কোনও অবস্থাতেই দেশে যাব না। কারণ পথে সংক্রামিত হওয়ার ভয় সর্বাধিক। যে যেটুকু পেরেছি মুদিখানার জিনিসপত্র কিনে এনেছি। না জানি কবে স্টোর বন্ধ হয়ে যায়। জীবানুনাশক ওয়াইপস দিয়ে পরিষ্কার করে জিনিসপত্র ঘরে তুলেছি। প্রথম ক’দিন দোকানগুলোয় ভিড় উপচে পড়ছিল। সে দিন বুঝিনি। কিন্তু আজ ভাল করেই কো-ল্যাটারাল ড্যামেজটা বুঝতে পারছি।

আরও পড়ুন: আমেরিকায় আড়াই লক্ষের মৃত্যুর আশঙ্কা, ফ্রান্সে এক দিনে মৃত ৪৯৯: করোনা আপডেট

হঠাৎই নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, এন-৯৫ মাস্ক, গ্লাভস সবই বাজারে অমিল। বাড়িতেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানো হয়েছে। ২৯ মার্চ থেকে বাড়ির কাছাকাছি ‘ইন্ডিয়ান গ্রসারি স্টোর’টাও বন্ধ হয়ে গেল। ওদেরও রসদে টান পড়ছে বোধহয়। বেশ কিছুদিন হল দেশ থেকে কার্গো আসা বন্ধ হয়েছে। ওরা এখন থেকে অনলাইন অপারেট করবে। বুঝতেই পারছি সমস্যা আরও বাড়ল।

সামান্য কিছু খাবারের দোকান, গ্রসারি স্টোর, মেডিসিন শপ এখনও খোলা আছে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরনো নিষেধ। গোটা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত ‘স্টে অ্যাট হোম’ অর্ডার জারি করা হয়েছে।

শপিং মলে স্যানিটাইজার, মাস্কের তাক পুরো ফাঁকা। ছবি পাঠিয়েছেন লেখক

আরও পড়ুন: এক রাতে আক্রান্ত বাড়ল ২৪০, দেশে আক্রান্ত ১৬৩৭, মৃত ৩৮

১৮ মার্চ কলকাতা তথা রাজ্যে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেল। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের কথা ভেবে একটা অবর্ণনীয় ভয় গ্রাস করল। মনে হল ওদের প্রয়োজনে আমরাও এখন দেশে যেতে পারব না। আর আমাদের জন্য ওরাও আমাদের কাছে আসতে পারবেন না। ভয় হল আমাদের মতো এত জনবহুল দেশে এই রোগটা ছড়িয়ে পড়লে শহর গ্রাম সব উজাড় হয়ে যাবে।নিউজে দেখছি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকে প্রচুর ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গোটা দেশে লক ডাউন জারি করা হয়েছে এবং বেশির ভাগ মানুষই সচেতন।তাঁরা বাড়িতেই থাকছেন।

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী শেয়ার করুন আমাদের ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায় কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement