প্রতীকী ছবি
জোড়া চাপের মুখে বেজিং। এক দিকে, করোনা-তদন্ত। অন্য দিকে, দেশে নতুন করে সংক্রমণের আশঙ্কা। প্রাথমিক ভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্তে ‘স্বচ্ছ’ থাকার বার্তা দিয়ে আপাতত দেশের একাংশে লকডাউনকেই পাখির চোখ করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।
গত কালই নতুন নির্দেশিকায় চিনফিংয়ের প্রশাসন জানিয়েছিল, অন্তত বেজিং শহরে আর মাস্ক পরে বাইরে বেরোনোর প্রয়োজন নেই। করোনা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। উহানে কিন্তু তিন দিন ধরে গণ-পরীক্ষা হয়েই চলেছে। শহরের মোট ১ কোটি ১০ লক্ষ নাগরিকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। বাকিরা লাইনে। এরই মধ্যে ফের তালাবন্দি দেশের উত্তর-পূর্বে জিলিন প্রদেশ। প্রথম করোনা-ধাক্কায় হুবেই প্রদেশে যখন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন, জিলিনে সংখ্যাটা তখন ১৩০-ও ছাড়ায়নি। এ বার নয়া সংক্রমণ ১১ হতেই মাঠে প্রশাসন। এখন দেশের বাকি অংশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন জিলিন শহর, মোট আক্রান্ত ৩৪। অন্য দিকে, হুয়েই সংস্থার বিরুদ্ধে ‘ট্রেড সিক্রেট’ চুরির মার্কিন অভিযোগ ঘিরেও দ্বন্দ্ব বহাল। চিনা বাণিজ্য মন্ত্রক আজ ফের বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, জাতীয় সুরক্ষার ধুয়ো তুলে এই মার্কিন জুলুম বন্ধ না-হলে এ বার স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ করবে বেজিং। নতুন করে আক্রান্তের খবর মিলছে দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও। তবে সে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের গবেষণা-পরীক্ষার ভিত্তিতে আজই জানিয়েছে, আক্রান্তেরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পরে আর ১৪ দিনের নিভৃতবাসের প্রয়োজন নেই। কিছু ক্ষেত্রে সুস্থ ব্যক্তির করোনা পরীক্ষাতেও পজ়িটিভ ফল মিলেছে। এর ব্যাখ্যায় আধিকারিকেরা জানান, হতেই পারে পিসিআর টেস্টে মৃত ভাইরাস ধরা পড়ছে!
ধন্দ তবু থাকছেই। নমুনা পরীক্ষা থেকে শুরু করে কোভিড-১৯-এর উপসর্গ বা উপসর্গহীনতা নিয়েও। লন্ডনের কিংস কলেজের টিম স্পেক্টর যেমন আজই ব্রিটেন প্রশাসনকে একহাত নিয়ে বলেন, ‘‘আমরা যে কোভিড-সিম্পটম ট্র্যাকার অ্যাপ নিয়ে কাজ করছি, তাতে অন্তত এমন ১৪টা উপসর্গের কথা আছে, যা সরকার কখনও উল্লেখই করেনি। যেমন, গন্ধ বা স্বাদ না-পাওয়া।’’ সরকারের এই গাফিলতিতে ব্রিটেনে ৫০ থেকে ৭০ হাজারের বেশি আক্রান্তের কোভিড-১৯ শনাক্তই হয়নি বলে দাবি তাঁর। দেশে আক্রান্ত ২ লক্ষ ৪৩ হাজার। মৃত প্রায় ৩৫ হাজার। ঘটনাচক্রে আজই গন্ধ কিংবা স্বাদ না-পাওয়াকে করোনার উপসর্গ হিসেবে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে ব্রিটেন।
আমেরিকায় আজই আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৪৫ হাজার ছুঁইছুঁই। ৯১ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো এরই মধ্যে দেশবাসীকে আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। গত কাল সাংবাদিক বৈঠকের সময়ে লাইভ টিভিতে করোনা-পরীক্ষাতেও অংশ নেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১৪ ঘণ্টা বোট চালিয়ে গোটা শহরের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন সুপারমার্কেট মালিক