প্রতীকী চিত্র
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই দেশজ ভ্যাকসিনকে বাজারে ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে রাশিয়া ও চিন। মার্কিন প্রশাসনের অন্দরেও শোনা যাচ্ছে, জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষাধীন ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিতে পারে তারা (বিশেষ করে, নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সমাধান না-মিললে)। এই পরিস্থিতিতে একটি মার্কিন দৈনিক আজ দাবি করল, বেশ কিছু ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা (ফাইজ়ার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না) সরকারের কাছে আবেদন জানাবে, পরীক্ষাধীন প্রতিষেধকের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা প্রমাণ না-হলে যাতে ছাড়পত্র দেওয়া না-হয়।
গত ১১ অগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, তাঁদের ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’ সফল। সেপ্টেম্বরেই ভ্যাকসিনটির বাজারে ছাড়ার কথা। চিন তারও আগে জুলাইয়ে পরীক্ষাধীন ভ্যাকসিন রোগীদের উপরে প্রয়োগ করা শুরু করেছে। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা তীব্র আপত্তি প্রকাশ করেছেন। অসম্পূর্ণ ট্রায়াল নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। কারণ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই ধাপেই সব চেয়ে বেশি সংখ্যক (দেড় হাজার থেকে চল্লিশ হাজার) অংশগ্রহণকারীর উপর ভ্যাকসিনের দীর্ঘকালীন কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা মাপা হয়।
মার্কিন দৈনিকটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, সংস্থাগুলি তাদের ভ্যাকসিনের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, গুণমান ও নৈতিকতা নিয়ে যথেষ্টই সচেতন। সে কথা মাথায় রেখেই হয়তো আগামী সপ্তাহে তারা সরকারের কাছে আবেদন জানাবে। এ দেশে ৬৪ লক্ষ মানুষ করোনা সংক্রমিত। মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৯২ হাজারের বেশি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প চান, জবাব হিসেবে নভেম্বরের আগে দেশবাসীর হাতে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে। আর তাই কোনও পক্ষ স্বীকার না-করলেও, ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির কাছে উপরমহল থেকে যে চাপ আসছে, তা স্পষ্ট। ফাইজ়ার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না অবশ্য এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
বিশ্বে করোনা
মৃত
৮,৮৫,৯৫৪
আক্রান্ত
২,৭২,১৮,৪০৮
সুস্থ
১,৯৩,০০,৩৩২
ডেমোক্র্যাটদের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস কাল বলেন, ট্রাম্পের কথা অনুযায়ী ভোটের আগে যদি সত্যিই ভ্যাকসিন চলে আসে, তিনি ভরসা করতে পারবেন না। কিন্তু কালও মার্কিন প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ে এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।’’ তাতে সন্দেহ বাড়ছে, তবে কি শীঘ্রই ভ্যাকসিন আনছে প্রশাসন! ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই! কিছু দিন আগেই ‘ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর কর্তার মুখে তেমন ইঙ্গিত মিলেছিল। আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় এপিডেমিয়োলজিস্ট অ্যান্টনি ফাউচিও বলেছেন, ‘‘নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিন চলে আসাটা খুব অস্বাভাবিক নয়।’’ ট্রাম্প-সমালোচক বলে পরিচিত ফাউচির কথায় আশা জাগছে, তবে কি সত্যি কথাই বলছেন প্রেসিডেন্ট!