ছবি এপি।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এখন নতুন সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে ইউরোপের দেশগুলি। হাসপাতালে শয্যা নেই। নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আইসিউ-ও। এই অবস্থায় চিনের মতোই রাতারাতি অস্থায়ী হাসপাতাল গড়ার চেষ্টা করছে
ইটালি, ফ্রান্স, ব্রিটেনের মতো দেশ। কোথাও সামরিক বিমান বা দ্রুত গতির ট্রেনে রোগীকে সরানো হচ্ছে অন্য প্রদেশে। কোথাও লাইব্রেরি বা কনভেনশন সেন্টারে গড়ে তোলা হচ্ছে অস্থায়ী হাসপাতাল। অপেক্ষাকৃত কম অসুস্থ মানুষদের সেখানে সরিয়ে করোনায় আক্রান্তদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে আইসিইউ থাকা হাসপাতালে।
লন্ডনের একটি কনভেনশন সেন্টারে খুব শীঘ্রই ৪০০০ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল শুরু করা হবে। অপেক্ষাকৃত কম সঙ্কটজনক রোগীদের সেখানে স্থানান্তরিত করা হবে। হাসপাতাল শয্যার সংখ্যা কুড়ি শতাংশ বাড়ানো হয়েছে স্পেনে। হোটেলগুলিকেও দ্রুত আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু আইসিউ-র সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে সমস্যা রয়েই গিয়েছে। ইটালির মিলান শহরে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট-সহ একটি ২০০ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল গড়া হয়েছে। তবু সেখানে মৃত্যু মিছিল থামার লক্ষণ নেই। মর্গে লাশের স্তূপ। গির্জাগুলি ভরে গিয়েছে কফিনে।
ইটালিতে এখন ধীরে হলেও নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা কমছে। কিন্তু ফ্রান্স বা স্পেনে মৃত্যু থামার লক্ষণ নেই। গত কালই প্যারিসে একসঙ্গে ৫০০ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। “মনে হচ্ছে যেন কোনও তৃতীয় বিশ্বের দেশে আমরা বাস করছি। পর্যাপ্ত মাস্ক নেই, নেই চিকিৎসার সরঞ্জামও,” বললেন প্যারিসের এক ইমার্জেন্সি কর্মী ক্রিস্টোফ প্রুডওম।
বস্তুত, উন্নত দেশগুলিকে চিকিৎসা সরঞ্জামের জন্য এখন তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম বিত্তবান দেশগুলির দিকে। আজই আমেরিকাকে মাস্ক-সহ চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠিয়েছে রাশিয়া। ফ্রান্সে ডাক্তারের দল পাঠিয়েছে
কিউবা। ইটালি, স্পেনে একাধিক প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠিয়েছে তুরস্কও।
তবে অস্থায়ী হাসপাতাল গড়া হলেও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক মিলবে কি ইউরোপে? ইটালিতে ইতিমধ্যেই ৬০ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসে সংক্রমিত ১০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। এত বিপুল সংখ্যক রোগীর চাপ ইউরোপের দেশগুলো কী করে সামলাবে সেই প্রশ্ন তাই থেকেই যাচ্ছে।