চলছে লকডাউন। তার মধ্যেই বইয়ের দোকান খোলার দাবিতে প্যারিসের সেন নদীর বুকে জড়ো হয়েছেন লেখক ও প্রকাশকেরা। এএফপি
এক সপ্তাহ আগেই প্রথম বারের জন্য দৈনিক সংক্রমণ পেরিয়েছিল এক লক্ষ। আট দিনের ফারাকে ভেঙে গেল সেই রেকর্ডও। আমেরিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা- আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে বলে জানাল জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি। অতিমারি শুরুর পরে এই প্রথম বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৬৫ হাজার ছুঁল।
শীতের শুরুতেই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ধরাশায়ী আমেরিকা। রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে বেশ কিছু প্রদেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম, হাসপাতালের শয্যা, ডাক্তারের ঘাটতি দেখা গিয়েছে। ফলে হটস্পটগুলিতে বাধ্য হয়ে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস আজ বলেন, গত প্রায় এক বছরের ভোগান্তিতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে, কিন্তু যত দিন না প্রতিষেধক আসছে তত দিন সাবধানতায় সামান্য ফাঁক দিলেও চলবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ে ক্লান্ত হয়ে যেতে পারি, কোভিড কিন্তু এখনও ক্লান্ত হয়নি। ইউরোপের দেশগুলি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এই ভাইরাসটিতে নির্দেষ্ট কোনও বদল ঘটেনি।’’ সংক্রমণ ঠেকানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বাঁচাতে বহু দেশই নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করছে।
ইটালিতেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ১০ লক্ষের চৌকাঠ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৩ হাজার মানুষের। বছরের শুরুতেই ইউরোপের প্রথম আক্রান্ত এই দেশটিতে শীর্ষে পৌঁছয় সংক্রমণ। দেশ জুড়ে লকডাউনের কড়াকড়িতে সংক্রমণের মাত্রা কমলেও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতি। কিন্তু গ্রীষ্ম যেতে না যেতেই গত কয়েক সপ্তাহে ইটালিতে ফের বাড়ে সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত ৩৩ হাজার। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৪২৪। মৃতের সংখ্যাও বাড়েছে দ্রুত। ২৪ ঘণ্টায় ৬২৩ জনের মৃত্যুতে মোট মৃত ৪২ হাজার ৯৫৩। সোমবারই মিলানের এক নামজাদা চিকিৎসক বলেছেন, ‘‘সার্বিক পরিস্থিতি হাতের বাইরে।’’ যে কারণে বার ও রেস্তরাঁগুলি দ্রুত বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি রাতে কার্ফু ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু তা যথেষ্ট নয় বলে সতর্ক করে আরও কড়া বিধিনিষেধ জারি করতে বলছেন চিকিৎসকেরা।
এই অবস্থায় উপযুক্ত প্রতিষেধকের আশায় তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব। রাশিয়া গত কালই জানিয়েছে, ট্রায়ালের ফলাফল দেখে তারা মনে করছে তাদের স্পুটনিক ভি টিকা করোনা নিরাময়ে ৯২ শতাংশ কার্যকর হবে। অগস্টের মধ্যেই জনসাধারণের উপরে প্রয়োগের জন্য তৈরি হয়ে যাবে এটি। জাপানেও সংক্রমণের ‘তৃতীয় ঢেউ’ শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, বুধবার নতুন ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন দেড় হাজার মানুষ। ৭ অগস্টের পরে যা সর্বোচ্চ। টোকিয়োতে এক দিন সংক্রমিত ৩১৭, ওসাকায় ২৫৬ জন।