‘ফ্রোমাগিজঁনস’। এই ফরাসি শব্দের অর্থ ‘এসো আমরা চিজ খাই’। করোনা-আতঙ্কের লকডাউনে এটাই এখন ফ্রান্সের মূলমন্ত্র করা হয়েছে।
ফ্রান্সবাসীর কাছে আবেদন করা হয়েছে, তাঁরা যেন অনেক বেশি করে চিজ খান।
সে দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুগ্ধশিল্পকে বাঁচাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্রান্সে চিজ বিক্রির স্বাভাবিক হার কমে গিয়েছে ৬০ শতাংশ।
লকডাউনের স্রেফ ফেলে দিতে হয়েছে কয়েক হাজার টন চিজ। উৎপাদনের পর ক্রেতার অভাবে তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
তবে এই আবেদন রাখার উদ্যোগের পথিকৃৎ ফ্রান্সের প্রতিবেশী বেলজিয়াম। সেখানে দেশবাসীর কাছে আবেদন করা হয়েছে, সপ্তাহে অনন্ত দু’বার ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়ার জন্য।
ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে প্যাকেটবন্দি ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের চাহিদা কমে গিয়েছে ৪০ শতাংশ।
ফলে বেলজিয়াম জুড়ে নষ্ট হচ্ছে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টন উদ্বৃত্ত আলু।
বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী তাতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১২ কোটি ইউরো।
ফ্রান্সে দুধ, বেলজিয়ামে আলুর মতো, গ্রেট ব্রিটেনের সেই তালিকায় রয়েছে মাংসশিল্প। এতই কমে গিয়েছে চাহিদা যে, দেশবাসীর কাছে আবেদন করা হয়েছে বেশি করে মাংস খাওয়ার।
সামাজিক দূরত্বের নিয়ম বজায় রাখতে গিয়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশে কমে গিয়েছে রেস্তরাঁ বা ক্যাফেতে গিয়ে খাওয়ার প্রবণতা।
তার ফলস্বরূপ ভেঙে পড়েছে খাদ্যের চাহিদা ও যোগানের শৃঙ্খল। খাবার-ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবাই আজ নিরাপত্তাহীনতায় আতঙ্কিত।
এক দিকে অর্থসঙ্কটে বাড়ছে অনাহার, অন্য দিকে, বিপুল পরিমাণ খাবার শুধু পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এই বিপরীত ছবি এখন কমবেশি কঠোর বাস্তব বিশ্বের সব দেশের ক্ষেত্রেই।