ডোনাল্ড ট্রাম্প
দশ দিনেই আমেরিকায় করোনা-মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ৫০ হাজার ছাড়াল আজ। আক্রান্ত প্রায় ন’লক্ষ। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, এ মাসে এখানে রোজ গড়ে অন্তত দু’হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে জুড়ল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন খেয়াল— ‘‘আচ্ছা, শরীরে জীবাণুনাশক ইনজেক্ট করে ফুসফুস সাফ করা যায় না?’’ কিংবা জোরালো আলো শরীরে ঢুকিয়ে করোনা তাড়ানো যায় কি না, সে-কথাও তিনি ভাবতে বললেন। গরম পড়লেই করোনা পালাবে— এমন কথা আগেও বলেছিলেন ট্রাম্প। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) দাবি, গরম-আর্দ্রতা কিংবা চড়া রোদের সঙ্গে এই ভাইরাসের দাপট কমার কোনও সম্পর্ক নেই। থাকলে উষ্ণ এবং আর্দ্র সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, তাইল্যাল্ড কিংবা ভারতে এর তেমন প্রভাবই পড়ত না। ট্রাম্প-তত্ত্বের প্রেক্ষিতে হু-র তরফে মার্গারেট হ্যারিসের মন্তব্য, ‘‘গ্রীষ্মে এই ভাইরাস কাবু হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। কিন্তু তেমন কোনও আশা নেই।’’
জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলাইনার মতো কিছু প্রদেশে শুক্রবার থেকেই শিথিল হচ্ছে লকডাউন। এরই মধ্যে গত কাল এই তত্ত্ব দেন ট্রাম্প। যা শুনে চিকিৎসকদের একাংশ বললেন, ‘‘আমরা তো জানি, মানুষ আত্মহত্যা করতে গেলেই এমন কীটনাশক নেওয়ার কথা ভাবে!’’ কোন ধরনের জীবাণুনাশক, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প। ‘প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে ট্রাম্পকে উদ্ধৃত করা’ নিয়ে পাল্টা সংবাদমাধ্যমকেই দুষছে হোয়াইট হাউস। পরে অবশ্য ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আপনাদের কথা মাথায় রেখেই একটু মজা করেছিলাম। দেখতে চেয়েছিলাম ,কী হয়।’’ ট্রাম্পের আগে হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান উইলিয়াম ব্রায়ান দাবি করেন, চড়া সূর্যালোক ও আর্দ্রতায় দ্রুত দুর্বল হয় করোনা। সেই সূত্রেই ইঞ্জেকশন প্রসঙ্গে ঢোকেন ট্রাম্প।
লকডাউন তোলার পিছনে আর্থিক অচলাবস্থাকে দায়ী করছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বেকারত্বের হার যে-ভাবে বাড়ছে, তা মহামন্দার থেকেও ভয়াবহ। প্রতি ছ’জনে এক জন চাকরি খুইয়েছেন আমেরিকায়। আজ ফের গোটা বিশ্বকে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস বলেন, ‘‘ওষুধ হোক বা ভ্যাকসিন, যা-ই পাওয়া যাক, তা যেন বিশ্বের একটা অংশে আটকে না-থাকে।’’