ব্রাজিলের বস্তিগুলোয় দ্রুত ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। উপযুক্ত ব্যবস্থার দাবিতে সাও পাওলোয় বিক্ষোভে তরুণী। এপি
বিশ্বের একটা বড় অংশ যখন লকডাউন থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চাইছে, তখনই যেন ফের নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণও। তালিকায় শীর্ষে আমেরিকা। সেখানে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ১৫ লক্ষ, মৃত ৯৩ হাজার ছুঁইছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় ফের হাজারের কাছাকাছি সংক্রমণের খবর মিলেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্ত প্রায় ৩ লক্ষ। সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা এখনও তিন হাজারের নীচে। মস্কোর দেওয়া এই পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, বিশেষজ্ঞদের এখন বেশি ভাবাচ্ছে ব্রাজিলের পরিস্থিতি। একাধিক সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ইটালি, ব্রিটেন এমনকি স্পেনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি। আক্রান্ত আড়াই লক্ষেরও বেশি। মৃত প্রায় ১৭ হাজার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই করোনাকে গোড়ায় ‘ছোটখাটো ফ্লু’ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জ়াইর বোলসোনারো। তাঁর দেশেরই সবচেয়ে বড় শহর সাও পাওলোতে এখন সরকারি হাসপাতাল উপচে পড়ার অবস্থা। মেয়র ব্রুনো কোভাস জানালেন, হাসপাতালের ৯০ শতাংশ আইসিইউ বেড ভর্তি। আর বড় জোর দু’সপ্তাহ। তার পরে আর কোনও হাসপাতালেই জায়গা পাওয়া যাবে না। একই রকম ভাবে দেশের প্রায় সব শহরেরই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। দেশের সবচেয়ে বড় সমাধিস্থলে নতুন করে গণকবর খোঁড়া হচ্ছে। বোলসোনারো তবু লকডাউন তুলে সব চালু করার পক্ষেই সওয়াল করে চলেছেন। ট্রাম্পের মতো তিনিও ম্যালেরিয়ার ওষুধের ভক্ত। কিন্তু করোনা-রুখতে কাজের কাজটা হচ্ছে কোথায়— মঙ্গলবার এই প্রশ্ন তুলেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানালেন, যথাযথ পরীক্ষা হলে ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা সরাকারি হিসেবের অন্তত ১৫ গুণ হওয়ার কথা!
আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ইরান বা ইটালির মতো ব্রাজিলও যে করোনার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে, এপ্রিলের শেষের দিকেই এমন একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু ব্রাজিল নয়, সংক্রমণ বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপর চাপ বাড়ছে চিলি, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়াতেও। সব শহরের হাসপাতালেরই ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ বেড ভর্তি। লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে যাচ্ছে কি না, প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: অনুদান বন্ধই করে দেব, হু-কে হুমকি ট্রাম্পের
রাশিয়ার ক্ষেত্রে যেমন মস্কোর পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে। দেশের মোট আক্রান্তের অর্ধেকই রাজধানীর বাসিন্দা। দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর তথা দেশের অন্যতম হটস্পট সেন্ট পিটার্সবার্গে আজ সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, শুধু করোনায় মৃত নয়, এখন থেকে সব দেহই বিশেষ সতর্কতা মেনে সমাধিস্থ করতে হবে। সপ্তাহখানেক হল, দেশে লকডাউন তোলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। কী ভাবে লকডাউন তোলা হবে, তার ভার ৮৫টি প্রদেশের প্রশাসনের উপরেই ছেড়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অতিমারি থামিয়ে দেবে চিনা ওষুধ!