ছবি: রয়টার্স।
সুস্থ হয়ে ওঠার পরও করোনা পজিটিভ হতে পারেন কোনও রোগী। কিন্তু সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা থাকে না তাঁর। বরং শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি নতুন করে অসুস্থ হতে দেয় না তাঁকে। সারা বিশ্বে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা যখন ৫০ লক্ষ ছুঁইছুঁই, সেইসময় এমনটাই দাবি করল দক্ষিণ কোরিয়ার সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।
করোনার কবল থেকে সুস্থ হওয়ার পরও শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে এমন ২৮৫ জনকে পর্যবেক্ষণে রেখে এমনটাই জানা গিয়েছে বলে দাবি ওই সংস্থার। তারা জানিয়েছে, পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর ফের সংক্রমণ ধরা পড়লেও দীর্ঘস্থায়ী কোনও সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা নেই ওই রোগীদের।
বলা হয়েছে, ওই সমস্ত রোগীদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের শরীরে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়লেও, ওই ভাইরাসগুলির বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা নেই। অর্থাৎ ওই রোগীদের শরীর থেকে যদি ভাইরাস ছড়ায়ও সেগুলি অসংক্রামক অথবা মৃত ভাইরাসের দেহাংশের ক্ষুদ্র কণা।
আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংক্রমণ দেশে, শুধু মাত্র মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত ৩৭ হাজার
দক্ষিণ কোরিয়ার সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তরফে সোমবার রাতে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পরে লকডাউন উঠে গেলে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে তেমন বিধিনিষেধ না থাকলে, করোনার কবল থেকে ফেরা মানুষদের সংস্পর্শে এলে কোনও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।
সে ক্ষেত্রে করোনা থেকে সেরে উঠে স্কুল, কলেজ এবং অফিসে ফেরার জন্য সাধারণ মানুষকে আর রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না বলে আশাবাদী দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকরা।
কোভিড-১৯ ভাইরাসকে দ্রুত শনাক্ত করতে এই মুহূর্তে পিসিআর টেস্টের উপরই আস্থা অধিকাংশ দেশের। কিন্তু পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভাইরাসের নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষা করে মৃত এবং সক্রিয় ভাইরাসের মধ্যে ফারাক বোঝা যায় না বলে গতমাসেই একটি পরীক্ষায় জানা গিয়েছিল। তাই করোনা পজিটিভ রোগী মানেই সংক্রমণ ছড়াবে এমন ভুল ধারণা ছড়িয়েছিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: লকডাউনের জেরে ভারত থেকে উধাও ১৬০০ কোটি ডলারের বিদেশি লগ্নি
এত দিন অ্যান্টিবডি পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে একটা মার্কার খুঁজে বার করার চেষ্টা করছিলেন গবেষকরা, যার মাধ্যমে রোগীর শরীরে করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। নয়া রিপোর্ট সেই গবেষণাকেও সমৃদ্ধ করবে বলে আশাবাদী গবেষকরা। তবে অআন্টিবডি ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হলেও, কত দিন পর্যন্ত শরীরে সেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা টিকে থাকবে তা নিয়ে এখনও সন্দিহান গবেষকরা।
তবে করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে দক্ষিণ কোরিয়ার সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের এই রিপোর্টে করোনা আতঙ্ক অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।