Health

প্রায় ন’মাস পরে লাইব্রেরি গেলাম

বিশ্বের বহু জায়গার তুলনায় সিডনির অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল।

Advertisement

হিন্দোল ঘটক 

সিডনি, অস্ট্রেলিয়া শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৩৪
Share:

ছবি: রয়টার্স।

বহু দিন বাদে, গত সপ্তাহে নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট লাইব্রেরিতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। গত বছর যেখানে প্রায়শই যেতাম, কোভিডের কারণে এ বছর সেখানে প্রথম পা পড়ল অগস্ট মাসের শেষে। লাইব্রেরির এক কর্মীকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘‘ওয়র্ল্ড প্রেস ফোটো এগ্জ়িবেশনটা কোন দিকে হচ্ছে, বলতে পারবেন?’’

Advertisement

ভদ্রলোক দেখিয়ে দিয়ে হাসি মুখে বললেন, ‘‘আমরা খুবই ভাগ্যবান যে, সিডনিতে এই প্রদর্শনী বাতিল করতে হয়নি!’’

এটা স্বীকার করতেই হবে, বিশ্বের বহু জায়গার তুলনায় সিডনির অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। এখানে সিনেমা হলে যে শুধু নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে তা-ই নয়, তাল মিলিয়ে টিকিটও বিক্রি হচ্ছে। বিধি-নিষেধ যেমন রয়েছে, তেমনই প্রতি পদক্ষেপে মানুষ আপন করে নিচ্ছে দৈনন্দিন জীবনের বদলগুলোকে।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়া

মোট আক্রান্ত - ২৬,১৩৬

মোট সুস্থ - ২২,১৬৯

মোট মৃত - ৭৩৭

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত - ৮৭

২৪ ঘণ্টায় মৃত - ৫৯

এখনও বেসরকারি সংস্থাগুলি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতেই উৎসাহ দিচ্ছে। দোকান-বাজারে গেলে বেশির ভাগ মানুষকেই মাস্ক পরতে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে দেখা যায়। কিছু জায়গায় নিয়োগ করা হয়েছে ‘কোভিড-১৯ ভলান্টিয়ার্স’, যাঁদের মূল কাজ হচ্ছে— ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা। এখানে যাতায়াতের জন্য লোকাল ট্রেন ব্যবহার করা হয়। এখন ভিড় কমাতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেটের সাহায্যে জেনে নেওয়া যাচ্ছে, কোন ট্রেনে কত ভিড় রয়েছে। কিছু বাসস্টপে বাস দাঁড় করিয়ে স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে। প্রতিটা ক্ষেত্রেই এ রকম নানা ছোট-বড় নিয়মে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি আমরা। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে এখানকার মানুষের সহায়তা এবং সচেতনতা।

কিন্তু গোটা অস্ট্রেলিয়া জুড়ে সব কিছুই যে আগের মতো হচ্ছে, এমনটা নয়। অন্যান্য দেশের মতো এখানেও উড়ান সংস্থা ও পর্যটন শিল্পের অবস্থা শোচনীয়। অন্যান্য নানা দিক থেকেও ধাক্কা খাচ্ছে দেশের অর্থনীতি। দেশ জুড়ে বহু মানুষ চাকরি খুইয়েছেন। এই বেড়ে-যাওয়া বেকারত্বের হার নিয়েই এখন চিন্তায় এ দেশের সরকার। তার উপর, দ্বিতীয় সংক্রমণ-ঢেউয়ের আশঙ্কাও রয়েছে। মেলবোর্নে যেমন এখনও প্রতিদিন নতুন সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। বেশ কিছু মৃত্যুও হচ্ছে। যার ফলে শহরের অনেকখানি অংশ ‘লকডাউন’ করে রাখা হয়েছে।

এই বিপর্যয়ে সরকারি সংস্থাগুলির পাশাপাশি বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। আমার এক বন্ধু, রোজ়ানা, এমনই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালায়। আগে তারা নানা সংস্কৃতিমূলক কাজ করত। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে মূলত দরিদ্র মানুষদের খাবার জোগান দেওয়ার কাজ করে চলেছে। রোজ়ানার কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতি মানুষকে সচেতন করার সঙ্গে সঙ্গে উদার হতেও শেখাচ্ছে। পরস্পরের সাহায্য করার মানসিকতা দিয়েই আমরা এই পরিস্থিতিকে জয় করতে পারব।’’

লেখক ম্যাকুয়্যারি ইউনিভার্সিটিতে গবেষক

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement