সাওপাওলোতে। ছবি রয়টার্স
সংক্রমণের গতি এখন দ্রুততম লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে। সব চেয়ে খারাপ দশা ব্রাজিল ও মেক্সিকোর। এবং অবস্থা ফেরার কোনও লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। ১২ লক্ষেরও বেশি আক্রান্ত গোটা দক্ষিণ আমেরিকায়। মারা গিয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ডিরেক্টর টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘‘ইউরোপের হাল কিছুটা শোধরালেও বাকি বিশ্বে সংক্রমণ সংক্রমণ শুধুই বাড়ছে।’’ হু-র মতে, আগামী দিনে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় সংক্রমণ ও মৃত্যু আরও বাড়বে। তাদের সতর্কবার্তা, ভেঙে পড়া অর্থনীতির রাশ টানতে যে সব দেশ লকডাউন তুলে দিচ্ছে, তাদের আরও বড় বিপদে পড়তে হবে। হালে প্রায় রোজই ১ লক্ষেরও বেশি সংক্রমণের খবর মিলছে। এ দিকে আজ থেকেই ধাপে ধাপে লকডাউন শিথিল করে ছন্দে ফেরার পথে হাঁটতে শুরু করেছে নিউ ইয়র্ক শহর।
ব্রাজিলে সংক্রমণ ৬ লক্ষ ৯৪ হাজারের কাছাকাছি। মৃত ৩৭ হাজারের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮১৩ জনের। একটি সমীক্ষা রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে, জুন শেষের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়াবে। মৃত্যু পেরিয়ে যাবে ৫০ হাজার। সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিভাগ জানাচ্ছে, এই পরিস্থিতির মধ্যে বড় প্রতিবন্ধকতা হল— কিটের অভাব। এর মধ্যে লকডাউন তো প্রায় উঠে গিয়েছে। গির্জা, গাড়ির শো-রুম, ঘর সাজানোর সামগ্রী বেচাকেনার মতো দোকানও খুলে গিয়েছে সেখানে।
আরও পড়ুন: জর্জ ফ্লয়েড কাণ্ডের জের, খোলনলচে বদলাচ্ছে মিনিয়াপোলিসের পুলিশ বিভাগ
মেক্সিকোয় গত সপ্তাহে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল। সব চেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটেছে গত সাত দিনে। এই প্রথম এক দিনে এক হাজার লোক মারা গিয়েছেন। মেক্সিকোয় করোনা পরিস্থিতি সামলানোর মূল দায়িত্বে থাকা উপ-স্বাস্থ্যসচিব হুগো লোপেজ গ্যাটেল বারবারই বলছেন, বাড়িতে থাকুন। কিন্তু বহু অফিস ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে। মেক্সিকোয় মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩,৬৯৯ জনের। সংক্রমণ ১ লাখ ১৭ হাজারের বেশি।
পেরুতে সংক্রমণ আরও বেশি। ২ লক্ষ ছুঁইছুঁই। মৃত্যু সাড়ে পাঁচ হাজারের আশপাশে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এতই খারাপ যে দোকানপাট, অফিস খুলে দেওয়ার পক্ষে সরকার। পেরুর প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভিজ়কারা জানান, শীঘ্রই দেশের ৮০ শতাংশ কর্মস্থান খুলে দেওয়া হবে।
সব মন্দের মধ্যে ভাল খবরও রয়েছে। উরুগুয়েতে সংক্রমিত মাত্র ৮৩৪ জন। ৩৫ লক্ষ মানুষের এই দেশে মারা গিয়েছেন এ পর্যন্ত এক জন। কিছু দিন আগে প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র ফিজি নিজেদের করোনা-মুক্ত ঘোষণা করেছিল। এ বার নিউজ়িল্যান্ডও জানাল, দেশে আর ভাইরাস নেই। সব কড়াকড়িই আজ তারা তুলে নিল। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দূরত্ববিধি বজায় রাখার প্রয়োজন নেই। জমায়েতেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ থাকবে। বিদেশিদের প্রবেশেও ছাড়পত্র দেওয়া হবে না এখনই।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর ‘স্কেলিটন কোস্ট’-এ সামুদ্রিক প্রাণীর এবং জাহাজের কঙ্কালের ফাঁকে ঘোরে ক্ষুধার্ত সিংহ