জার্মানির মিউনিখে শনিবার এ ভাবেই প্রতীকী প্রতিবাদ জানালেন ইরানে চলা হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের এক সমর্থক। ছবি: রয়টার্স।
কালো পোশাক। কাঁধে কালো ব্যাগ। মাথার কালো উড়নি মাফলারের মতো করে গলায় ঝোলানো। ডান হাতে মাইক নিয়ে বলতে শুরু করার আগে গোছ করে বাঁধা চুলটা টেনে নিলেন সামনে। তার পর দৃপ্ত গলায় বলে উঠলেন, ‘‘যারা মাথা ঠিকমতো না ঢাকার জন্য প্রার্থীপদ স্বীকার করে না, সেই সভাকে আমি মানি না।’’ হাততালি আর সমর্থনে ফেটে পড়া দর্শকমণ্ডলীর সামনে দিয়ে মঞ্চ ছাড়ার আগে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গেলেন সেইকালো উড়নি।
ইরানের মেয়ে জয়নাব কাজেমপোরের এই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল। শুক্রবার তেহরানের ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বার্ষিক সভায় ঘটনাটি ঘটে। জয়নাব নিজে ইঞ্জিনিয়ার। বোর্ড অব ডিরেক্টর্সে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। হিজাব ঠিক নেই বলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছে। ইরানের প্রতিবাদী সমাজকর্মী মাসি আলিনেজাদ ওই ভিডিয়ো শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘সাহস কাকে বলেএই দেখুন!’’
যে ভাবে জয়নাব উড়নি ছুড়ে দিয়েছেন, যে ভাবে উপস্থিত সকলে তাঁকে সমর্থন করেছেন, যে ভাবে ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে— এ সব লক্ষ করে অনেকেই মনে করছেন, ইরান সরকার যত দমনপীড়নই চালাক, যত লোককে জেলে ভরুক আর যত জনকে ফাঁসিতে ঝোলাক, ইরানের মানুষ আসলে আর মাহশা আমিনির আগের দিনগুলোয় ফিরে যেতে চান না। তাই কোনও ভাবেই প্রতিবাদের ঢেউকে বাগে আনা যাচ্ছে না। এ সপ্তাহের গোড়াতেই যেমন ইরানের জাতীয় গ্রন্থাগারের কিছু সদস্যা হিজাব না পরায় সাসপেন্ড হয়েছিলেন। তাই নিয়েও প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছে।