ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আগেও বহু বার অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ পর্বের প্রচারে ফের নিজস্ব ভঙ্গিতে আমেরিকায় বসবাসকারী অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বারের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্প তাঁর এক বক্তৃতায় নাম না করে অভিবাসীদের আবর্জনা বলে উল্লেখ করেছেন। যা শুনে ক্ষোভে ফুঁসছেন নেট-নাগরিকদের একাংশ।
অ্যারিজ়োনায় নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং এ বারের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্প। অর্থনীতি, বিদেশ-নীতি, স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন ট্রাম্প। কথায় কথায় ওঠে অবৈধ অভিবাসনের প্রসঙ্গও। তখনই ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা আসলে বাকি বিশ্বের কাছে আবর্জনার পাত্রের মতো। আপনারা জানেন, প্রথম বার আমি এই ধরনের কথা বললাম। কিন্তু এটাই একেবারে যথার্থ ব্যাখ্যা।’’ একই সঙ্গে জো বাইডেনের প্রশাসনের সমালোচনা করতে গিয়ে এবং নিজের প্রতিপক্ষ, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী তথা দেশের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে কটাক্ষ করে ট্রাম্প আরও বলেছেন যে, ‘‘আমেরিকা আসলে অনেকের কাছেই আবর্জনা ফেলার একটা জায়গা মাত্র।’’ যা শুনে ক্ষুব্ধ নেট-নাগরিকদের একটা বড় অংশ। অনেকেরই বক্তব্য, ‘‘তার মানে কি ঘুরিয়ে অভিবাসীদের আবর্জনা বললেন ট্রাম্প?’’ ক্ষুব্ধ নেট-নাগরিকেরা বলছেন, ‘‘ট্রাম্প আসলে আমেরিকাকে কোনও দিন ভালবাসতে পারেননি। তাই অভিবাসীদের এ ভাবে আবর্জনা বলে তিনি দূরে সরিয়ে রাখতে চান বরাবর।’’
অ্যারিজ়োনার সভায় ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, বাইডেন এবং হ্যারিসের প্রসঙ্গ উঠলেই প্রবল রাগ হয় তাঁর। ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘কমলা হ্যারিস আসলে সেই সব অপরাধী-মনস্ক অভিবাসীদের জন্য আমেরিকায় প্রবেশের দরজা খুলে দিয়েছেন, বিশ্বের নানা প্রান্তের কারাগার এবং মানসিক পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে যারা ছাড়া পেয়েছে।’’ আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে অপরাধ এবং খুনের পিছনেও অভিবাসীদের হাত রয়েছে বলে দাবি ট্রাম্পের। তাঁর কথায়, ‘‘আমেরিকায় এমন অভিবাসীরাও ঢুকে পড়েছে যারা হয়তো কোনও একদিন সকালে কোনও অভিভাবকের সামনেই তাঁদের কন্যাসন্তানের ঘাড় ধরে তার গলা কেটে খুন করে দেবে। কেউ কিছুই করে উঠতে পারবেন না।’’
এর আগে হেটি থেকে আসা অভিবাসীদের আক্রমণ করতে গিয়ে তাঁদের ‘খারাপ জিন’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রাম্প। গত সেপ্টেম্বরে কমলা হ্যারিসের সঙ্গে মুখোমুখি এক বিতর্ক সভায় ‘অভিবাসীরা কুকুর-বেড়াল খায়’ বলেও কটাক্ষ করেছিলেন ট্রাম্প।
তবে অভিবাসী প্রসঙ্গে ট্রাম্পের নানা মন্তব্যে নেটজ়েনদের একাংশ ক্ষুব্ধ হলেও সাম্প্রতিক কিছু সমীক্ষা বলছে, নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, রিপাব লিকান প্রার্থীর জনপ্রিয়তাও একটু একটু করে বাড়ছে। এর আগে বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় জনপ্রিয়তার নিরিখে এগিয়ে ছিলেন হ্যারিস। কিন্তু সম্প্রতি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রস স্কুল অব বি জ়নেস’-এর করা এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অর্থনীতির কথা মাথায় রাখলে আমেরিকার ৪৪ শতাংশ মানুষ ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতেই আস্থা রাখার কথা বলছেন। উল্টো দিকে, কমলার উপরে ভরসা করছেন ৪৩ শতাংশ ভোটার।