আল শার্পটন
মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটি টুইট নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা মেরিল্যান্ড প্রদেশকে। এখানকার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় দৈনিকও। সেই দৈনিকটি তার সম্পাদকীয়তে লিখেছে, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যা করে থাকেন, তা নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে থাকি আমরা। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইঁদুর বা কীটের সঙ্গে তুলনা করব, আমরা এতটাও পেরে উঠিনি।’’
গত শনিবার মার্কিন কংগ্রেসের আফ্রো-মার্কিন সদস্য অ্যালাইজ়া কামিংসকে নিশানা করতে গিয়ে মেরিল্যান্ডের কৃষ্ণাঙ্গপ্রধান জেলা বল্টিমোর নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করে ফের শোরগোল তৈরি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কামিংস এসেছেন বল্টিমোর থেকে। ট্রাম্পের টুইটে ছিল, বল্টিমোর ‘বিরক্তিকর, ইঁদুরভরা আবর্জনার স্তূপ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। কামিংস সম্প্রতি মেক্সিকো সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ সমালোচনা করেছিলেন। তাতে রুষ্ট ট্রাম্প এ ভাবে চড়াও হয়েছে তাঁর উপরে।
শুধু কামিংসে থেমে নেই তিনি। সোমবার আবার নাগরিক অধিকার রক্ষা নিয়ে লড়াই করা আল শার্পটনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। শার্পটনও কৃষ্ণাঙ্গ। তিনি জানিয়েছিলেন, সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্পের বল্টিমোর সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করবেন। সেই শুনেই খেপে যান ট্রাম্প। বলেন, ‘শার্পটন ঝামেলা তৈরি করা ছাড়া আর কিছু পারেন না!’ টুইটে প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘‘শার্পটনকে আমি ২৫ বছর ধরে চিনি। একসঙ্গে কত লড়াই করেছি। ও তো ট্রাম্পকে পছন্দ করত। আমার কাছ থেকে কত সুবিধা নিয়েছে ও। বিশ্বস্ত লোক, কিন্তু বড় ঝামেলাবাজ। সব সময়েই লাভের কথা ভাবে। নিজের কাজটাই করছে। শ্বেতাঙ্গ আর পুলিশদের ঘৃণা করে।’’ যার পাল্টা জবাবে শার্পটন লিখেছেন, ‘‘ট্রাম্প বলছেন, আমি ঝামেলাবাজ! ধর্মান্ধদের জন্য আমি সমস্যা তৈরি করি। আর উনি যদি আমাকে বিশ্বস্তই মনে করেন, তা হলে ওঁর ক্যাবিনেটে জায়গা দিতে পারতেন।’’
বস্তুত বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করা থেকে সরছেন না প্রেসিডেন্ট। এর আগে কংগ্রেসের চার অ-শ্বেতাঙ্গ মহিলা-সদস্যকেও আক্রমণ করেছেন তিনি। তার পর কামিংস আর শার্পটন তাঁর নিশানায়। মেরিল্যান্ডের দৈনিক তাই লিখেছে, ‘‘এই কংগ্রেস সদস্যরা প্রেসিডেন্টের সিংহাসনের কাঁটা। উনি ভাবছেন, কংগ্রেসের আফ্রো-মার্কিন সদস্যদের আক্রমণ করে খুব ভাল রাজনীতি করছেন। শ্বেতাঙ্গরাই শ্রেষ্ঠ— যারা ভাবে, তাদের সেটা ভালই লাগছে।’’ এর পরে ট্রাম্পকে ‘ওভাল অফিসে এ যাবৎকালের সবচেয়ে অসৎ ব্যক্তি’ বলে সমালোচনা করেছে দৈনিকটি। আরও বেশ কিছু কড়া শব্দে ট্রাম্পের নারীবিদ্বেষী মনোভাবের বিরুদ্ধে লিখেছে তারা।