সেই প্রচার পুস্তিকা
সময় বেশি নেই। নরেন্দ্র মোদীকে ভরসা করেই মেয়র পদের জন্য লড়াইয়ে নেমেছেন কনজারভেটিভ প্রার্থী জ্যাক গোল্ডস্মিথ। লন্ডনের মেয়র পদের জন্য ভোট আগামী ৫ মে।
ওয়েম্বলি, হ্যারো এবং উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের ভারতীয় অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে জ্যাকের ভোট-প্রচার জুড়ে শুধুই মোদী। এবং ভারত। হিন্দুদের মন জিততে বিশেষ ভাবে নকশা করা প্রচার-পুস্তিকা বিলি করছেন কনজারভেটিভ মেয়র পদপ্রার্থী। তাতে লেখা, কেন ভারতীয়দের মেয়র পদের জন্য গোল্ডস্মিথকেই বেছে নেওয়া উচিত। যেমন, বলা হয়েছে গত নভেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন লন্ডনে এসেছিলেন তখন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে কিন্তু গোল্ডস্মিথই গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে, তাঁকে স্বাগত জানাতে। সঙ্গে রীতিমতো তুলনা টানার মতো করে উল্লেখ করা হয়েছে, লেবার পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী সাদিক খান কিন্তু মোটেও সেখানে যাননি। বরং মোদী যাতে লন্ডন সফরে না আসতে পারেন তার জন্য নানা চেষ্টা করেছিল লেবার পার্টি। এ ছাড়াও ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে গত বছর যখন মোদী এসেছিলেন তখন সেখানেও হাজির হয়েছিলেন তিনি। মোদীর সঙ্গে তাঁর একটি ছবি ছাপিয়ে তাঁদের সুসম্পর্কের উদাহরণও দিতে চেয়েছেন গোল্ডস্মিথ। ছাপিয়ে দিয়েছেন, ভারতের কোথায় কোথায় ঘুরে এসেছেন তার নামও।
এখানেই অবশ্য শেষ নয়। সেই প্রচার-পুস্তিকায় বলা হয়েছে, হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে তিনি যোগ দেন। যেমন, তিনি কিংস্টনে দীপাবলি উদ্যাপন করেন, ভক্তিবেদান্ত মন্দিরে (হের্টফোর্টশায়ারের ইসকন মন্দির) জন্মাষ্টমীর উৎসবে যান আর হ্যারোর নবরাত্রির উৎসবে তো প্রতি বছরই যান। ওই সব এলাকায় যে গুজরাতি বাসিন্দাই বেশি, সে কথা মাথায় রেখেই নির্বাচনী ইস্তাহারে গোল্ডস্মিথ বলেছেন, ভারতীয়দের কথা ভাবেন তিনি। তাদের বাড়িতে প্রচুর সোনাদানা থাকে, এ কথা জানে বলেই ছিনতাইবাজেরা ভারতীয়দের নিশানা করে বেশি। এটা তিনি লক্ষ্য করেছেন। তাই গোল্ডস্মিথ মেয়র হলে পুলিশের সঙ্গে কথাবার্তা বলে ভারতীয় পরিবারগুলির জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবেন।
এটুকু বলেই অবশ্য থেমে থাকেননি কনজারভেটিভ মেয়র পদপ্রার্থী। তিনি ভারতীয়দের সতর্ক করে দিতে আরও জানিয়েছেন, লেবার পার্টির প্রার্থীকে মেয়র করলে কিন্তু ঘরে সর্বনাশ ডেকে আনা হবে। কারণ লেবার পার্টি গয়নার উপরে সম্পত্তি কর বসানোর পক্ষপাতী। এ ছাড়াও মেয়র হলে তিনি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ভাল করার চেষ্টা করবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে আসুক, এটাই তাঁদের দল চায়। আর লেবার পার্টিকে ভোট দিলে থাকতে হবে ইইউ-এর মধ্যেই।
গোল্ডস্মিথের মোদী-স্তূতি দেখে অন্য এশীয় দেশের বাসিন্দারা বিশেষ খুশি হননি অবশ্য। চটেছেন ভারতীয়দের একাংশও। শিখদের স্থানীয় একটি সংবাদপত্র লিখেছে, গোল্ডস্মিথের এমন প্রচারকে ‘ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ’ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।