Russia Ukraine War

Russia-Ukraine war: ভারতীয় পড়ুয়াদের পণবন্দি করেছে ইউক্রেন সেনা? রাশিয়ার দাবি ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেরও দাবি, যে সব ভারতীয় পড়ুয়া ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়ায় যেতে চাইছেন, তাঁদের খারকিভে আটকে রাখা হয়েছে। রাশিয়ায় পৌঁছতে পারলেই তাঁদের বাড়ি ফেরানো হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ০৫:৫৬
Share:

পণবন্দি ভারতীয় ছাত্ররা? ছবি :রয়টার্স।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ভারতীয় পড়ুয়াদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে দাবি করল রাশিয়া।

Advertisement

আজ দিল্লির রুশ দূতাবাস টুইটারে লিখেছে, ‘‘সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী এই ছাত্রছাত্রীদের পণবন্দি করেছে এবং তাঁদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। যে কোনও উপায়ে তাঁদের রাশিয়া যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর সম্পূর্ণ দায় কিভের।’’ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেরও দাবি, যে সব ভারতীয় পড়ুয়া ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়ায় যেতে চাইছেন, তাঁদের খারকিভে আটকে রাখা হয়েছে। রাশিয়ায় পৌঁছতে পারলেই তাঁদের বাড়ি ফেরানো হবে।

এ দিন প্রথমে জানা যায়, দিল্লির চাপে ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’-এর ব্যবস্থা করছে রাশিয়া। ইউক্রেনের ঘড়িতে তখন বেলা দেড়টা। ভারতীয় পড়ুয়াদের মোবাইলে দূতাবাস থেকে মেসেজ আসে, খারকিভ ছাড়তে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। সন্ধ্যা ছ’টার মধ্যে পৌঁছে যেতে হবে পিসোচিন, বাবায় বা বেজ়লিউডিভকা-য়। পড়ুয়ারা গুগল ম্যাপ ঘেঁটে দেখেন, পিসোচিন খারকিভ থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে। বাবায় প্রায় ১২ কিলোমিটার। আর বেজ়লিউডিভকার দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার।

Advertisement

এতখানি রাস্তা কী ভাবে যাওয়া হবে? বাস, গাড়ি মিলছে না। স্টেশনে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে উঠতে গেলে অনেককে মারধর করে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভাবতে ভাবতেই এক ঘণ্টা পরে মোবাইলে ফের মেসেজ আসে, বাস, ট্রেন, গাড়ি না পেলে অন্তত পায়ে হেঁটে ওই তিনটি এলাকায় পৌঁছতেই হবে। যে কোনও উপায়ে সন্ধ্যা ছ’টার মধ্যে খারকিভ থেকে বেরিয়ে ওই তিনটি জনপদের যে কোনও একটিতে পৌঁছে যেতে হবে।

বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, খারকিভে চূড়ান্ত হামলা চালানোর আগে রাশিয়ার পুতিন প্রশাসনই ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য এই ‘সেফ প্যাসেজ’-এর বন্দোবস্ত করে দিয়েছে। সেই কারণেই এত কম সময়ের মধ্যে পড়ুয়াদের খারকিভ ছাড়তে বলা হয়। কোথায়, কত ক্ষণের মধ্যে যেতে হবে, তা-ও রাশিয়াই বলে দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, “ওই সব জায়গা, সময় কোনওটাই আমরা ঠিক করিনি। রাশিয়ার তথ্যের ভিত্তিতেই পড়ুয়াদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাশিয়ার বাহিনী খারকিভে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলা বর্ষণ শুরু করেছিল। সেই সময়ই খারকিভে কর্নাটকের ছাত্র নবীন শেখরাপ্পার মৃত্যু হয়। বাঙ্কারে বহু ছাত্রছাত্রী আটকে থাকলেও তাঁদের পক্ষে বেরিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব ছিল না। এর পরেই বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দিল্লিতে রাশিয়ার ভাবী রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভকে ডেকে পাঠিয়ে দাবি করেন, ভারতীয়দের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’-এর বন্দোবস্ত করা হোক। ইউক্রেনের একের পর এক এলাকা রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়ার পর সেখান থেকেই ভারতীয় পড়ুয়াদের বার করে আনা সম্ভব কি না, তা নিয়েও নয়াদিল্লি মস্কোর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। খারকিভে প্রচুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সেখানেই যে সব চেয়ে বেশি ভারতীয় পড়ুয়া রয়েছেন, মোদী সে কথা পুতিনকে জানান। এর পর দুই দেশ যোগাযোগ করে পড়ুয়াদের ‘সেফ প্যাসেজ’টি চূড়ান্ত করে।

বুধবার সকালে রাশিয়ার প্যারাট্রুপাররা খারকিভ শহরে নেমে পড়লে নতুন করে পড়ুয়াদের নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। ভাবী রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, মস্কো ভারতীয়দের রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের মধ্যে দিয়ে ‘সেফ প্যাসেজ’ করে দিতে একটি ‘মানবিক করিডর’ তৈরির চেষ্টা করছে। খারকিভে অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস রয়েছে। এখানেই ভারতীয়দের সংখ্যা সব থেকে বেশি ছিল। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ও বুধবার সকালেও অনেকে ট্রেনে করে খারকিভ ছেড়েছেন। উল্টো দিকে ভারতীয় পড়ুয়াদের অভিযোগ, হাজার খানেক ছাত্রছাত্রী রেল স্টেশনে পৌঁছে গেলেও শুধুমাত্র ইউক্রেনের নাগরিকদেরই ট্রেনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই পড়ুয়াদের কাছে বার্তা যায়, ট্রেন না পেলে তাঁরা যেন ১১-১২ কিলোমিটার পায়ে হেঁটেই খারকিভ থেকে বেরিয়ে যান। অরিন্দম বলেন, “আমরা জানি, সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ওখানে যুদ্ধ চলছে। সকলের নিরাপত্তার জন্যই ওঁদের যে কোনও উপায়ে নিরাপদ এলাকায় পৌঁছতে বলা হয়েছে।”

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত, খারকিভ থেকে পড়ুয়ারা নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে গেলে, সেখান থেকে রাশিয়ার সেনার সাহায্যেই তাঁদের ইউক্রেন সীমান্ত পার করিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে আসা যেতে পারে। এর জন্য ইউক্রেনের রাজধানী কিভের ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের একটি ছোট দল দেশের পূর্বে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছে। উল্টো দিকে মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীরা ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার বেলগর্ড ও কুর্স্ক শহরে পৌঁছে গিয়েছেন।

এরই মধ্যে আজ ইউক্রেনে ২২ বছরের ভারতীয় ছাত্র চন্দন জিন্দালের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। পঞ্জাবের বার্নালার চন্দন ভিনিতসিয়ায় মেডিক্যাল কলেজে পড়তেন। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি হাসপাতালে আইসিইউ-তেএ ভর্তি ছিলেন। তাঁর বাবা শিশন কুমারও ওখানেই রয়েছেন। তিনি রোমানিয়া হয়ে ছেলের দেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করেছেন। কিন্তু গত কাল রাশিয়ার গোলায় নিহত নবীন শেখরাপ্পার দেহ খারকিভ হাসপাতালের মর্গ থেকে দেশে ফেরানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য, সব রকম চেষ্টা করা হবে যাতে নবীনের দেহ ফিরিয়ে আনা যায়। জনপদের যে কোনও একটিতে পৌঁছে যেতে হবে।

বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, খারকিভে চূড়ান্ত হামলা চালানোর আগে রাশিয়ার পুতিন প্রশাসনই ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য এই ‘সেফ প্যাসেজ’-এর বন্দোবস্ত করে দিয়েছে। সেই কারণেই এত কম সময়ের মধ্যে পড়ুয়াদের খারকিভ ছাড়তে বলা হয়। কোথায়, কত ক্ষণের মধ্যে যেতে হবে, তা-ও রাশিয়াই বলে দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, “ওই সব জায়গা, সময় কোনওটাই আমরা ঠিক করিনি। রাশিয়ার তথ্যের ভিত্তিতেই পড়ুয়াদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাশিয়ার বাহিনী খারকিভে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলা বর্ষণ শুরু করেছিল। সেই সময়ই খারকিভে কর্নাটকের ছাত্র নবীন শেখরাপ্পার মৃত্যু হয়। বাঙ্কারে বহু ছাত্রছাত্রী আটকে থাকলেও তাঁদের পক্ষে বেরিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব ছিল না। এর পরেই বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দিল্লিতে রাশিয়ার ভাবী রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভকে ডেকে পাঠিয়ে দাবি করেন, ভারতীয়দের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’-এর বন্দোবস্ত করা হোক। ইউক্রেনের একের পর এক এলাকা রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়ার পর সেখান থেকেই ভারতীয় পড়ুয়াদের বার করে আনা সম্ভব কি না, তা নিয়েও নয়াদিল্লি মস্কোর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। খারকিভে প্রচুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সেখানেই যে সব চেয়ে বেশি ভারতীয় পড়ুয়া রয়েছেন, মোদী সে কথা পুতিনকে জানান। এর পর দুই দেশ যোগাযোগ করে পড়ুয়াদের ‘সেফ প্যাসেজ’টি চূড়ান্ত করে।

বুধবার সকালে রাশিয়ার প্যারাট্রুপাররা খারকিভ শহরে নেমে পড়লে নতুন করে পড়ুয়াদের নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। ভাবী রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, মস্কো ভারতীয়দের রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের মধ্যে দিয়ে ‘সেফ প্যাসেজ’ করে দিতে একটি ‘মানবিক করিডর’ তৈরির চেষ্টা করছে। খারকিভে অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস রয়েছে। এখানেই ভারতীয়দের সংখ্যা সব থেকে বেশি ছিল। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, মঙ্গলবার
সন্ধ্যা ও বুধবার সকালেও অনেকে ট্রেনে করে খারকিভ ছেড়েছেন। উল্টো দিকে ভারতীয় পড়ুয়াদের অভিযোগ, হাজার খানেক ছাত্রছাত্রী রেল স্টেশনে পৌঁছে গেলেও শুধুমাত্র ইউক্রেনের নাগরিকদেরই ট্রেনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই পড়ুয়াদের কাছে বার্তা যায়,
ট্রেন না পেলে তাঁরা যেন ১১-১২ কিলোমিটার পায়ে হেঁটেই খারকিভ থেকে বেরিয়ে যান। অরিন্দম বলেন, “আমরা জানি, সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ওখানে যুদ্ধ চলছে। সকলের নিরাপত্তার জন্যই ওঁদের যে কোনও উপায়ে নিরাপদ এলাকায় পৌঁছতে বলা হয়েছে।”

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত, খারকিভ থেকে পড়ুয়ারা নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে গেলে, সেখান থেকে রাশিয়ার সেনার সাহায্যেই তাঁদের ইউক্রেন সীমান্ত পার করিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে আসা যেতে পারে। এর জন্য ইউক্রেনের রাজধানী কিভের ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের একটি ছোট দল দেশের পূর্বে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছে। উল্টো দিকে মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীরা ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার বেলগর্ড ও কুর্স্ক শহরে পৌঁছে গিয়েছেন।

এরই মধ্যে আজ ইউক্রেনে ২২ বছরের ভারতীয় ছাত্র চন্দন জিন্দালের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। পঞ্জাবের বার্নালার চন্দন ভিনিতসিয়ায় মেডিক্যাল কলেজে পড়তেন। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি হাসপাতালে আইসিইউ-তেএ ভর্তি ছিলেন। তাঁর বাবা শিশন কুমারও ওখানেই রয়েছেন। তিনি রোমানিয়া হয়ে ছেলের দেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করেছেন। কিন্তু গত কাল রাশিয়ার গোলায় নিহত নবীন শেখরাপ্পার দেহ খারকিভ হাসপাতালের মর্গ থেকে দেশে ফেরানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য, সব রকম চেষ্টা করা হবে যাতে নবীনের দেহ ফিরিয়ে আনা যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement