গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কাশ্মীর নিয়ে পড়ে না থেকে সন্ত্রাস দমনে উদ্যোগী হোক পাকিস্তান। একই ইস্যুকে হাতিয়ার করে বার বার রাষ্ট্রপুঞ্জের নজর কাড়ার চেষ্টা করায়, পাকিস্তানের উদ্দেশে এ বার এমনই কড়া বার্তা দিল ভারত।
রাষ্ট্রপুঞ্জে ৭৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সমস্ত দেশের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয়। সেই বার্তাতেই নতুন করে কাশ্মীর বিতর্ক উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে সরব হন তিনি।
শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ‘‘সদস্য দেশগুলি যেমন চায়, সে ভাবেই কাজ করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তবে জম্মু-কাশ্মীর এবং প্যালেস্তাইন বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরেই জিইয়ে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ কবে তাঁদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে, কবে তাঁদের স্বাধিকারকে স্বীকৃতি দেবে, তার জন্য দিন গুনছেন অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা।’’
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার! গত বছরেই ব্লক সাড়ে তিন হাজার পেজ
কুরেশি আরও বলেন, ‘‘বর্তমানে রাষ্ট্রপুঞ্জকে বক্তৃতার মঞ্চে পরিণত করা হয়েছে। সংগঠনের সংকল্প এবং সিদ্ধান্তগুলিকে অবজ্ঞা বিদ্রূপ করা হয়। বিশেষত নিরাপত্তা পরিষদে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা তলানিতে এসে ঠেকেছে।’’
প্রত্যুত্তরে অধিকার প্রয়োগ করে কুরেশির দাবি খারিজ করে দেয় ভারত। বিদেশমন্ত্রকের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র বলেন, ‘‘ভারত আশা করেছিল, বারংবার এই ধরনের মিথ্যে অভিযোগ, যা কিনা পাকিস্তানের ট্রেডমার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় এ বার অন্তত তা থেকে অব্যাহতি মিলবে। কিন্তু যে দেশের কোথাও পৌঁছনোর লক্ষ্যই নেই, তাদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক কূটনীতি, মত বিনিময় এবং বিতর্কের প্রশ্নে তাদের কাছ থেকে তেমন কিছু প্রত্যাশা রাখাই বৃথা।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জে ফের কাশ্মীর প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলা নিয়েও পাকিস্তানকে একহাত নেন বিদিশা। তিনি বলেন, ‘‘আজ ফের যা শুনলাম, তা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের মনগড়া কাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়। কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীর, যা কিনা ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তা নিয়ে এই বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। আর রাষ্ট্রপুঞ্জে যদি কিছু অমীমাংসিত থেকে থাকে, তা হল সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের সক্রিয়তা। গোটা বিশ্বে সন্ত্রাসের কেন্দ্রস্থল হিসেবেই পরিচিত পাকিস্তান। দেশের মাটিতে জঙ্গিদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দেওয়া, তাদের শহিদ আখ্যা দেওয়া এবং ধারাবাহিক ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাওয়ার কথা তারা নিজেরাই স্বীকার করেছে।’’
আরও পড়ুন: তিন দাবিতে রাজ্যসভা বয়কট বিরোধীদের, ধর্না তুললেন সাংসদরা
রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো সংগঠনের মঞ্চের অপব্যবহার না করে নিজেদের ঘরোয়া সমস্যার দিকে নজর দিলে, পাকিস্তানের মঙ্গল হবে বলেও মন্তব্য করেন বিদিশা মৈত্র।