—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিমের হত্যাকাণ্ডে ধৃত দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আগেই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। এ বার বাংলাদেশে তদন্তের অগ্রগতি এবং সেখানকার পুলিশের হাতে ধৃত বাকি অভিযুক্তদের সম্পর্কে জানতে চায় সিআইডি। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে সেগুলি জানতে চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, যা অভিযুক্তদের ভারতে আনার প্রথম ধাপ বলে অনুমান।
রাজ্য পুলিশের এক অফিসার জানান, বাংলাদেশে আনোয়ারুল আজিমের হত্যাকাণ্ডে পুলিশের তদন্তের বিষয়ে জানতে চেয়ে নবান্নের মাধ্যমে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখান থেকে বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাছে ওই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। সূত্রের দাবি, বাংলাদেশের পুলিশ সিআইডি-র ওই আর্জি পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কবে তার উত্তর মিলবে, সেই বিষয়ে কেউ কিছু জানতে পারেননি। সূত্রের খবর, ওই সাত জন বর্তমানে সেখানকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে। বাংলাদেশে পূর্বতন সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময়ে বেশ কিছু জেল ভেঙে বহু বন্দি পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সাংসদ খুনের অভিযোগে সে দেশের পুলিশের হাতে ধৃত শিমুল ভুইয়াঁ ওরফে আমান্নুলাহ, তানভীর ভুইয়াঁ, শিলাস্তি রহমান, ফয়সাল আলি ও মোস্তাফিজুর রহমান-সহ বাকিরা যে কেন্দ্রীয় কারগারে ছিল, তা অক্ষত রয়েছে।
গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে নিখোঁজ হয়ে যান বাংলাদেশের ওই সাংসদ। পরে নিখোঁজের মামলার সূত্র ধরে এ রাজ্যের গোয়েন্দারা জানতে পারেন তাঁকে নিউ টাউনের একটি আবাসনে খুন করা হয়েছে। যাতে জড়িতরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। খুনের প্রমাণ লোপাটের জন্য সাংসদের দেহের মাংস এবং হাড় ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। পরে মাংসের টুকরোগুলি সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়। হাড়গুলি ফেলা হয় ভাঙড়ের পোলেরহাট থানার কৃষ্ণমাটিতে বাগজোলা খালে। পরে হাড় এবং মাংস উদ্ধার করেন সিআইডির তদন্তকারীরা। ওই মামলায় তদন্তে নেমে কসাই জিয়াদ হাওলাদার এবং সিয়াম আলিকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে সপ্তাহ দু’য়েক আগে আদালতে চার্জশিট দেন তদন্তকারী অফিসার।
কেন বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছেন এ রাজ্যের তদন্তকারীরা? সিআইডি সূত্রের খবর, এ রাজ্যে দু’জন গ্রেফতার হলেও ওই মামলার বাকি অভিযুক্তেরা বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছে। তাদের কাছ থেকে জানা দরকার খুনের মোটিভ কী। তদন্তকারীদের দাবি, ওই মামলার মূল চক্রী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিন বাংলাদেশের সাংসদকে খুনের জন্য আমানুল্লাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। তার তত্ত্বাবধানেই ফয়সাল ও মোস্তাফিজুরকে রোগী সাজিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমানুল্লা এবং শাহিনের নির্দেশেই সিয়াম কসাই জিহাদকে মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিল। এক তদন্তকারী জানান, এখানে গ্রেফতার হওয়া জিহাদ এবং সিয়াম অনেক তথ্য দিয়েছে। তার সঙ্গে বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের বয়ান মিলিয়ে দেখা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে তদন্তে ওই দেশের পুলিশ কী পেয়েছে, তা জানা দরকার। তাই পুরোটা জানার জন্যই বাংলাদেশে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।