ফেব্রুয়ারি মাসেই ইস্তফা দিচ্ছেন নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডেন। ফাইল ছবি।
ফেব্রুয়ারি মাসেই ইস্তফা দিচ্ছেন নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডেন। তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে চলেছেন দেশের আর এক মন্ত্রী ক্রিস হিপকিনস। জাসিন্ডার উত্তরসূরি হিসাবে তিনি একাই মনোনীত হয়েছেন। শাসকদলের সাংসদেরা আর কারও নাম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রকাশ্যে আনেননি। ফলে ক্রিসই হতে চলেছেন নিউ জ়িল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেই ইস্তফার কথা জানিয়ে দিয়েছেন জাসিন্ডা। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর শেষ দিন হতে চলেছে ৭ ফেব্রুয়ারি। জাসিন্ডা বলেন, ‘‘অনেক হয়েছে, এ বার আমি দায়িত্ব ছেড়ে দেব।’’ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে তাঁর অনীহার কারণ জানতে চাওয়া হলে জাসিন্ডা বলেন, ‘‘এমন একটি বিশেষ পদের সঙ্গে গুরুদায়িত্বও আসে। কখন নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আপনি সঠিক ব্যক্তি আর কখন নন, তা বোঝার দায়িত্বও আপনারই।’’
ঠিক ছিল, জাসিন্ডা দায়িত্ব ছাড়ার আগে ক্ষমতাসীন নিউ জ়িল্যান্ড লেবার পার্টিতে তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচন হবে। দেখা যায়, দলের অন্দরেই জাসিন্ডার উত্তরসূরি হিসাবে ক্রিসকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোনও দ্বিমত প্রকাশ্যে আসেনি। নিউ জ়িল্যান্ড লেবার পার্টির প্রায় সকল সাংসদই ক্রিসকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। তবে রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্রিসের পক্ষে সাংসদদের ভোট দিতে হবে। তার পরেই নিউ জ়িল্যান্ডের ৪১তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জায়গা পাকা হবে ক্রিসের।
৪৪ বছর বয়সি ক্রিস নিউ জ়িল্যান্ডের পুলিশ এবং শিক্ষামন্ত্রী। তিনি দেশের প্রাক্তন কোভিড মোকাবিলা মন্ত্রীও বটে। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি, দারিদ্র এবং অপরাধ প্রবণতা নিয়ে যখন শাসকদল লেবার পার্টিকে চাপে রেখেছিল বিরোধীরা, সেই সময় সাধারণ নির্বাচনে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ক্রিস। কোভিড মোকাবিলাতে বিশ্বের অন্য অনেক দেশের চেয়ে এগিয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ড। আর সে ক্ষেত্রেও ক্রিসের অবদান এবং প্রথম সারির নেতৃত্ব ছিল চোখে পড়ার মতো।
রবিবার বেলা ১টা নাগাদ লেবার পার্টির নেতারা একত্রিত হয়ে ৪১তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্রিসকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচিত করবেন।
নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ৬ বছর দায়িত্ব সামলেছেন জাসিন্ডা। ২০১৭ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। সে সময় তিনি ছিলেন বিশ্বের কনিষ্ঠতম রাষ্ট্রনেতা। ২০২০ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টির বিপুল জয়ের পরে দ্বিতীয় বার নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আসনে বসেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁর আচমকা পদত্যাগের ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তৈরি করেছে।